স্কুলে মোট পাঁচ শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের মধ্যে চার জনকেই বুথ লেভেল অফিসারের (বিএলও) দায়িত্বে পাঠাল নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকায় রয়েছেন প্রধানশিক্ষকও। ফলে পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার জোগাড় পূর্ব বর্ধমানের হরিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে!
কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের এই স্কুলে মোট পড়ুয়া ২০৬ জন। ৪ নভেম্বর থেকে চার শিক্ষক এসআইআর-এর কাজে যোগ দেবেন। ফলে বাকি একজন শিক্ষিকাকে একাই সামলাতে হবে গোটা স্কুল। ২০৬ পড়ুয়ার ক্লাস নেওয়া, মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করা এবং প্রশাসনিক কার্জকর্ম। স্বপ্না মুখোপাধ্যায় নামে সেই শিক্ষিকা বলেন, “আমি একা কী করে স্কুল চালাবো! ক্লাস নেওয়া, খাওয়ার ব্যবস্থা দেখা—সব মিলিয়ে কাজের প্রচুর বোঝা।”
প্রধান শিক্ষক মদনমোহন ঘোষ বলেন, “নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে গেলে স্কুলের ছাত্রদের পড়াবে কে? পঠনপাঠনের ব্যাঘাত হবেই।”
বিএলও-র দায়িত্ব পাওয়া সহ-শিক্ষিকা সাথী সিংহ বলেন, “আমাদের নির্বাচনের কাজ করতে হবে, ফলে স্কুলের পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের খুব ক্ষতি হবে।”
এই অবস্থায় প্রধানশিক্ষক ইতিমধ্যেই কাটোয়ার প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিকের কাছে বিকল্প শিক্ষক নিয়োগের আবেদন জানিয়েছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের কাটোয়া পশ্চিমচক্রের অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, স্কুলের পঠনপাঠনের সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে আপাতত হরিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যত অনিশ্চিত। শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় মহলে তাই এখন একটাই প্রশ্ন—‘‘নির্বাচনের কাজের চাপে স্কুলে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে না তো?’’