পড়ে রয়েছে জমি। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে। নিজস্ব চিত্র
এ বছর আমন ধানের মরসুমের শুরু থেকেই কৃপণ ছিল বর্ষা। এই মুহূর্তে আমন ধান রোপণের মরসুম প্রায় শেষ। কিন্তু জলের অভাবে পশ্চিম বর্ধমানের অর্ধেকেরও বেশি জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে কৃষি-কর্তাদের সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তার মধ্যেও জেলার কাঁকসা ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে আমন ধানের চাষ সব থেকে বেশি হয়েছে। ফাঁকা জমিতে ডালশস্য চাষের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দফতর।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছর জেলায় প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। এ বছর প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে জেলায় ধান রোপণ হয়েছে মাত্র প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ করা যায়নি।
কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি? জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, জুন ও জুলাইয়ে আমন ধানের জন্য সেরা সময়। এই সময় বীজ বাড়তে থাকে। তবে এ বছর ওই দু’মাসে জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি ছিল। চাষিরা জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে অনেক জমিতেই জলের অভাবে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। তবে ডিভিসি-র জল পাওয়ার পরে, কাঁকসা ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের কিছু এলাকায় চাষের কাজ কিছুটা এগিয়েছে। সে সঙ্গে, অগস্টের শুরু থেকে কয়েক বার নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টির কারণে ধান চাষের কাজ কিছুটা এগিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফাঁকা জমিতে বিউলি-সহ ডালশস্য এবং আগাম সর্ষে চাষের বিষয়ে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি-কর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই দু’টি ফসলের চাষে জল কম লাগে।পাশাপাশি, জমির যা আদ্রর্তা আছে, তা এই দু’টি ফসলের ক্ষেত্রে উপকারী। জেলা সহ-কৃষি অধিকর্তা (শস্য ও সুরক্ষা) দেবদুলাল মিত্র বলেন, “জেলায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে দু’টি ফসল চাষের জন্য বীজ দেওয়া হবে। দু’টি ফসলের জন্য সার খুবই কম লাগে। জমির উর্বরতাও বাড়ে।” কৃষি-কর্তারা জানাচ্ছেন, ফলন বাড়াতে চাষিরা ডিএপি বা ইউরিয়া প্রতি লিটার জলে ২০ গ্রাম করেমিশিয়ে ফসলে ‘স্প্রে’ করতে পারেন। জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা জাহিরুদ্দিন খান বলেন, “এই পরিস্থিতিতে শস্যবিমার উপরেও আমরাজোর দিচ্ছি।”
কৃষি দফতরের পরামর্শকে স্বাগত জানাচ্ছেন চাষিরাও। অসীম ঘোষ, সাধন মণ্ডল-সহ জেলার কয়েক জন চাষি বলেন, “এ বছর আমন ধানের চাষ করতে পারিনি। ফসল নিয়ে খুবই চিন্তায় রয়েছি। এখন ডালশস্য চাষ করেই পরিস্থিতির সামালদিতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy