Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Mask

মাস্ক পরলেই মিলবে বিশুদ্ধ অক্সিজেন, অভিনব আবিষ্কার বর্ধমানের স্কুলছাত্রের

দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র দেবর্ষি নিজের বিজ্ঞান ভাবনা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করে ফেলেছে পরিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহের এই যন্ত্র।

দেবর্ষির ‘ইউনিভার্সাল মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’।

দেবর্ষির ‘ইউনিভার্সাল মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামালপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২১ ১৯:৩৪
Share: Save:

ডাক্তার, নার্স এবং কোভিড যোদ্ধাদের জন্যে ‘ইউনিভার্সাল মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’ আবিষ্কার করে সাড়া ফেলে দিল খুদে বিজ্ঞানী দেবর্ষি দে। পূর্ব বর্ধমানের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র দেবর্ষি নিজের বিজ্ঞান ভাবনা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করে ফেলেছে করোনা যোদ্ধাদের পরিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহের এই যন্ত্র।

পাশাপাশি ‘ইউনিভার্সাল মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’-এর সাহায্যে শ্বাসকষ্টের রোগীরা ’নেবুলাইজেশনের’ সহায়তাও তাঁর আবিষ্কৃত মাস্কের মাধ্যমে পাবে বলে দেবর্ষির দাবি।

মেধাবী ছাত্র দেবর্ষির বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার প্রত্যন্ত গ্রাম বেত্রাগড়ে। সে জামালপুরের সেলিমাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। দেবর্ষি জানিয়েছে, দু’ধরনের ‘ইউনিভার্সাল ’মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’ সে তৈরি করেছে। তার মধ্যে একটি প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধা অর্থাৎ ডাক্তার ও নার্সদের ব্যবহারের জন্যে। আর একটি সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্যে। একই প্রযুক্তিতে তৈরি হলেও প্রথমটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন । দ্বিতীয়টি অপেক্ষাকৃত কম শক্তির এবং আকারে সামান্য ছোট ।

মুলত ১২ ভোল্ট ডিসি রি-চার্জেবল লিথিয়াম ব্যাটারি, বাজার থেকে কেনা একটি ’টিপি ৪০৫৬’ এবং একটি ’এক্সএল ৬০০৯’ সার্কিট বোর্ডের সাহায্যে এই ’ইউনিভার্সাল মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’ তৈরি করা হয়েছে বলে দেবর্ষি জানিয়েছে’ । তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি করা তাঁর ‘মাস্ক এয়ার সাপ্লায়ার’-এ ২টি ‘এয়ার সাকার’ রয়েছে। আর ডাক্তার ও নার্সদের জন্যটিতে রয়েছে ৫টি ’এয়ার সাকার’ । প্রতিটি ’এয়ার সাকারের’ মধ্যে রয়েছে ৬ টি ০.১-০.৩ মাইক্রোনের ফিল্টার। যা বাতাসকে ১০০ শতাংশ বিশুদ্ধ করে পাইপ লাইনের মধ্যমে মাস্কের ভিতরে পাঠিয়ে দেয়। ছোটটির ওজন ২০২ গ্রাম আর বড়টির ৪০৫ গ্রাম। ছোটটি তৈরি করতে প্রায় ৩৫০টাকা এবং বড়টি ৫০০ টাকা পড়েছে।’’

দেবর্ষির বাবা ব্রজেন দে হাওড়ার লিলুয়ার ‘এমসিকেবি ইনস্টিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ রসায়নের শিক্ষক। মা হীরা গৃহবধূ। দেবর্ষির দিদি দেবর্পিতা এমসিকেবি ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষে ছাত্রী। ব্রজেন বলেন, ‘‘ছোট বয়স থেকেই বিজ্ঞান ভিত্তিক কারিগরি বিষয় নিয়ে দেবর্ষির আগ্রহ। ইলেকট্রনিক্স খেলনা বা অন্য যা কিছু সে হাতের কাছে পেত তার সবটা খুলে ভিতরে কী কী যন্ত্র আছে তা বোঝার চেষ্টা করত। এখন স্কুল বন্ধ রয়েছে। বাড়িতে বসেই নিজের বিজ্ঞান ভাবনা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাছে কিছু করার চেষ্টা করছিল।’’

জামালপুর ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসক ঋত্বিক ঘোষ জানিয়েছেন, পিপিই কিট পরিহিত হয়ে কাজ করা ডাক্তার ও নার্সদের ক্ষেত্রে দেবর্ষির আবিষ্কৃত মাস্ক সহায়ক হতে পারে বলে তাঁর মনে হয়েছে । ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “দেবর্ষির আবিষ্কৃত মাস্কটি কার্যকরী মনে হওয়ায় বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Corona school student Mask Covi-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE