কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠকের পরে রফাসূত্র বেরনোয় ইস্কোয় অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করল পাঁচটি শ্রমিক সংগঠন। কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত চার শ্রমিকের পরিজনদের চাকরি না দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। বুধবার রাত থেকে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের শিল্প আইন মোতাবেক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়ার পরে সমস্যা মিটে গিয়েছে।’’
৬ মে ভোরে গলিত লোহা পড়ে দগ্ধ হন ইস্কোর ন’জন ঠিকা শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। সংস্থার পাঁচটি শ্রমিক সংগঠন মৃতদের পরিবারের নিকট আত্মীয়দের চাকরি দেওয়ার দাবি তোলে। ইস্কো কর্তৃপক্ষ গোড়ায় রাজি হলেও পরে এক জনের স্ত্রীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। সংস্থার তরফে জানানো হয়, বাকি চার জনের স্ত্রী-সন্তান না থাকায় তাঁদের পরিবারের কাউকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের শুধু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এর প্রতিবাদেই আন্দোলনে নামে শ্রমিক সংগঠনগুলি। ওই চার জনের নিকট আত্মীয়কেও চাকরি দেওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে সংস্থার এমডি-র কার্যালয় লাগোয়া এলাকায় তিন দিনের লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু হয়। তার পরেও দাবি মানা না হলে ধর্মঘটে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন শ্রমিক নেতারা।
বৃহস্পতিবার অবস্থান কর্মসূচির শেষ দিন ছিল। তবে রফাসূত্র খুঁজতে বুধবার রাত থেকে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাধান হয়। ঠিক হয়, মৃত দুই শ্রমিক আশিস সিক্কা ও আশিস সাহুর ভাইকে কারখানায় স্থায়ী চাকরি দিতে সেল বোর্ডের কাছে অনুমতি চাইবেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। বাকি দুই শ্রমিক সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় ও শঙ্কর নাগের ভাই বা দাদা না থাকায় তাঁদের কোনও নিকটাত্মীয়কে ইস্কোর কনজিউমার কো-অপারেটিভে চাকরি দেওয়া হবে। মৃত শ্রমিকদের পরিজনদের উপস্থিতিতে ইস্কোর দুই আধিকারিক চন্দ্রশেখর সিংহ ও সীতাংশু প্রসাদের সঙ্গে শ্রমিক নেতারা এই চুক্তিপত্রে সই করেন।
আইএনটিইউসি নেতা হরজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এটা শ্রমিকদের জয়। আমরা শ্রমিক স্বার্থে এই সুবিধা আদায়ের পরে অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে নিয়েছি।’’ সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য ভাল ছিল না। আমরা যৌথ আন্দেলন করে তা বানচাল করেছি।’’ এই রফাসূত্রে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, দাবি বিএমএস, এইচএমএস এবং এআইটিইউসি নেতাদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy