জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাম্প হাউসের সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনার পরে, জেলায় অবৈধ ভাবে বালি তোলা ও কয়লা চুরির অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে তরজা অব্যাহত।
কয়লা ও বালি মাফিয়াদের শাসক দল ব্যবহার করছে, এই অভিযোগ বিজেপির। তাই জেলায় কয়লা ও বালি চুরি রুখতে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে ‘ই-মেল’ করেন বলে দাবি বিজেপির রাজ্য কার্যনির্বাহী সদস্য জিতেন্দ্র তিওয়ারির। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
জিতেন্দ্রর দাবি, জেলা জুড়ে কয়লা ও বালি পাচারের রমরমা বেড়ে গিয়েছে। সব থেকে বেশি পাণ্ডবেশ্বর, ফরিদপুর এবং অন্ডাল এলাকায় এই কারবার চলছে। তাঁর অভিযোগ, এই কয়লা ও বালি মাফিয়াদের শাসক দল ব্যবহার করে। এই মাফিয়ারা আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা মুজুত করে। তারা নিজেদের মধ্যে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে।
জিতেন্দ্রর দাবি, প্রশাসনের একটি সূত্রে জানতে পেরেছেন, অবৈধ কয়লা ও বালির কারবারকে কেন্দ্র করে ২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে পাণ্ডবেশ্বর, ফরিদপুর ও অন্ডাল এলাকায় আট জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে ২০০৪ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ জন খুন হয়েছেন। তিনি বলেন, “তাই পুলিশ কমিশনারের কাছে অবৈধ ভাবে কয়লা বালি পাচার বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছে। তা না হলে খনি এলাকায় ফের অপরাধের ঘটনা ঘটবে। সব থেকে বেশি নজর দেওয়া উচিত পাণ্ডবেশ্বর, ফরিদপুর ও অন্ডাল এলাকায়। কারণ, এ সব এলাকাতেই সব থেকে বেশি অবৈধ কয়লা ও বালির কারবার চলছে।” সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ইসিএলের আধিকারিকদের একাংশ যুক্ত না হলে এ ভাবে অবৈধ কয়লা খনন এবং পাচার সম্ভব হত না। সম্প্রতি কয়লা মন্ত্রীর কাছে তিনি চিঠি লিখে এ বিষয়ে জানিয়েছেন।
যদিও এই অবৈধ কারবার বন্ধ না হওয়ার জন্য কংগ্রেস কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করেছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবেশ ভট্টাচার্য মন্তব্য, “কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ মদত ছাড়া কয়লার অবৈধ কারবার চলতে পারে না। তাই সব জেনেও জিতেন্দ্র প্রতিবাদের নামে অভিনয় করছেন। কারণ, তিনি তৃণমূলে থাকার সময়ে বখরা পেতেন। এখন তা পাচ্ছেন না।” সিপিএমের রাজ্য সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এক মাসের মধ্যে চার বার পুলিশি পাহারায় বালি পাচারের তথ্য তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠিয়েছেন। কয়লা পাচারও অবাধে চলছে। এ বিষয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “রাজ্য প্রশাসন অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে, বার বার তা প্রমাণিত হয়েছে। কয়লার অবৈধ কারবার বন্ধ করতে জিতেন্দ্রর উচিত কয়লা মন্ত্রীকে ঘেরাও করা।”
পুলিশ জানিয়েছে, যে কোনও ধরনের অবৈধ কারবার বন্ধ করতে নিয়মিত অভিযান চলছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)