Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Galsi

বোমাবাজিতে অশান্ত গলসি

সম্প্রতি গলসির নানা এলাকায় বারবারই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ, বোমাবাজির অভিযোগ উঠছে।

গলসির সিংপুরে গোলমালের পরে পুলিশের টহল। নিজস্ব চিত্র।

গলসির সিংপুরে গোলমালের পরে পুলিশের টহল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গলসি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০৬
Share: Save:

ফের বোমাবাজি গলসিতে। তবে এ বার অন্য গ্রামে। চালকলের বোনাস নিয়ে মতান্তরের জেরে ক’দিন ধরেই দু’গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল গলসির সিংপুরে। শুক্রবার সকালে বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হল গ্রাম। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ঘটনার পিছনে রয়েছে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আধ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে গ্রামে। ১০-১২টি বোমা ফাটে। তবে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে ওই গ্রাম লাগোয়া ভাসাপুল এলাকায় রয়েছে চালকলটি। সিংপুর গ্রামের অনেকে সেখানে শ্রমিকের কাজ করেন। চালকলের শ্রমিকদের পরিচালনার রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে মাঝেমধ্যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি পাকে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের দাবি, একটি গোষ্ঠীতে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা জেলা সহ-সভাপতি জাকির হোসেনের অনুগামীরা। অন্যটিতে দলের ব্লক যুব সভাপতি পার্থ মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ লোকজন।

চালকল সূত্রে জানা যায়, গত বছর শ্রমিকদের যত টাকা বোনাস দেওয়া হয়েছিল, এ বারও সেই টাকাই দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু পার্থবাবুর অনুগামীরা তাতে রাজি হলেও জাকির-ঘনিষ্ঠেরা এই সিদ্ধান্ত মানতে চাননি। তা কেন্দ্র করেই বুধবার থেকে অশান্তি চলছিল। এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের কয়েকজন মহিলা দাবি করেন, প্রথমে এক পক্ষ গ্রামের মাঝে ঢালাই রাস্তায় বোমা ফাটায়। পাল্টা বোমা ছোড়ে অন্য পক্ষের লোকজন। দু’পক্ষের লোকজনই এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত।

পার্থবাবুর অভিযোগ, ‘‘৩ নভেম্বর আলোচনায় বসে বিষয়টি মেটানোর কথা হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার জেলার কয়েকজন নেতা আমাদের না জানিয়ে চালকলে যান। সে কারণেই এলাকা উত্তপ্ত হয়েছে। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।’’ যদিও জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ‘‘দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব এসে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু বহিরাগত সেই সিদ্ধান্ত ভণ্ডুল করার চেষ্টা করে। তা নিয়েই অশান্তি বেধেছে।’’ তবে তাঁর দাবি, এটা দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, চালকলের শ্রমিকদের গোলমাল। সব রাজনৈতিক দলের সমর্থক শ্রমিকেরাই চালকলে রয়েছেন।

সম্প্রতি গলসির নানা এলাকায় বারবারই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ, বোমাবাজির অভিযোগ উঠছে। শিড়রাই পঞ্চায়েতের রামনগর, লোয়া-রামগোপালপুরের রানাডি গ্রামে গোলমাল বেধেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঢোলা গ্রামে এক তৃণমূল কর্মীর গোয়ালঘরে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের গলসি ১ ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন ব্লকে কেউ গোষ্ঠী-রাজনীতি করলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে দল। এই সিদ্ধান্ত সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi TMC Bomb
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE