বেলা গড়ালেই পথঘাট ফাঁকা। চোখ-মুখ ঢেকে বেরোতে হচ্ছে প্রয়োজনে। তীব্র গরমে এমনই পরিস্থিতি জেলার নানা প্রান্তে। বেলার দিক থেকে বইছে গরম হাওয়া। সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চাষের জমির ফুটিফাটা অবস্থা নিয়ে চিন্তায়পড়েছেন চাষিরা।
রবিবার ছুটির দিন থাকায় রাস্তায় এমনিই লোকজন কম ছিল। কিন্তু সোমবারও বেলা বাড়ার সঙ্গে রাস্তাঘাট ফাঁকা হতে শুরু করে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, খুব প্রয়োজন ছাড়া দুপুরে বাইরে না যাওয়াই ভাল। বাইরে বেরোলেও টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া, প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। চিকিৎসক অতন্দ্র দাস বলেন, ‘‘সারা দিন ৩-৪ লিটার জল খেতেই হবে। যাঁরা বাইরে ঘোরাঘুরি করেন, তাঁদের এক ঘণ্টা অন্তর জল খেতে হবে।’’ শশা, তরমুজ জাতীয় ফল খাওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শ্যামলকান্তি পাল বলেন, ‘‘এই সময়ে বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা, হালকা খাবারের দিকে নজর দিতে হবে।’’
গরমে শিশুদের বিষয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। যে সব শিশু স্কুলে যাচ্ছে, বাড়ি ফেরার পরে তাদের স্নান বা ভিজে কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ তথা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, ‘‘স্কুল সকালের দিকে হলে ভাল হয়। পড়ুয়াদের পর্যাপ্ত জল, ফল ও সহজপাচ্য খাবার দিতে হবে।’’
চড়া রোদে সমস্যায় পড়েছেন খেতমজুরেরা। জমিতে মাথায় গামছা, কাপড় বেঁধে কাজ করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। হাটকালনার পানমণি হেমব্রম বলেন, ‘‘বার বার জল খেয়েও অস্বস্তি কাটছে না। তাই দুপুরের মধ্যে মাঠ থেকে উঠে পড়তে হচ্ছে।’’ আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গরম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জমিতে ধান গাছে সদ্য ফুল আসা শুরু হয়েছে। শুকনো আবহাওয়ায় ক্ষতি হতে পারে। গরমে আম, লিচু গাছ থেকে শুকিয়ে ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জমিতে সেচ ও ফল গাছে জল স্প্রে করার দিকে জোর দিতে হবে বলে পরামর্শ কৃষি বিশেষজ্ঞদের। কালনা মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘টানা জমিতে কাজ করলে সমস্যা হতে পারে। মাঠের যে কোনও ছায়াযুক্ত স্থানে মাঝে বিশ্রাম নিতে হবে। পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)