কর্মরত অবস্থায় স্কুল শিক্ষক বাবার মৃত্যুর পরে চাকরির আবেদন করেছিলেন ছেলে। বারো বছর পরে হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাঁর হাতে সেই চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিল রাজ্য সরকার।
ছেলে পার্থ মণ্ডলের আইনজীবী এক্রামূল বারি জানান, তাঁর মক্কেলের বাবা পার্বতীকুমার মণ্ডল জগদাবাদ শশীভূষণ হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৪ সালে কর্মরত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এরপরেই বর্ধমান জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের কার্যালয়ে চাকরির আবেদন জানান পার্থবাবু। ওই কার্যালয় তাঁর আবেদন নথিভূক্ত করার জন্য শিক্ষা দফতরের ডিরেক্টরের কাছে সুপারিশ করে। একই সঙ্গে জানায়, ওই যুবকের আবেদনে অনুমতি দেওয়া হোক। দীর্ঘকাল পরে ২০১১ সালে ডিরেক্টরের কার্যালয় থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়, নতুন আইন অনুযায়ী পার্থবাবুকে চাকরি দেওয়া যাবে না। এরপরেই চাকরির দাবিতে ২০১২ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন পাথর্বাবু। হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া নির্দেশ দেন, ওই যুবকের বাবা যে বছর মারা গিয়েছেন, সেই বছর এই ধরনের চাকরি দেওয়ার জন্য সরকারের যে নিয়ম ছিল, সেই নিয়মে চাকরি দিতে হবে। সেই নির্দেশ মতো জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক পার্থবাবুর ইন্টারভিউ নেন ও তাঁকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব পাঠান স্কুল শিক্ষা দফতরের ডিরেক্টরের কাছে। ২০১৪ সালে সেই প্রস্তাব খারিজ করেন ডিরেক্টর। তিনি জানিয়ে দেন, পার্থদের পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে। তাঁকে চাকরি দেওয়া যাবে না।
এক্রামূলবাবু জানান, ডিরেক্টরের বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫ সালে বিচারপতি অশোক দাস অধিকারীর আদালতে ফের মামলা দায়ের করা হয়। বিচারপতি দাস অধিকারী গত বছর ১০ এপ্রিল জানিয়ে দেন, জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের প্রস্তাব খারিজ করা যাবে না। পার্থবাবুকে চাকরি দিতে হবে। কিন্তু ডিরেক্টর জানান, চাকরি পেতে হলে টিচার্স এবিলিটি টেস্ট দিতে হবে। এর পরে ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন পার্থবাবু। গত ১৩ জুন বিচারপতি দাস অধিকারী ডিরেক্টরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে চাকরির নিয়োগপত্র দিতে হবে। সেই মতো, এ দিন রায়নার মুক্তিপুর কেয়ামপুর ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয় ডিরেক্টরের পক্ষ থেকে। হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আগামীকাল শনিবার পার্থবাবুকে ওই স্কুলে গিয়ে কাজে যোগ দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy