Advertisement
E-Paper

পুরসভায় পদ চেয়ে তদ্বির নানা নেতার, অস্বস্তি দলে

নেতারা প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও পুরভোটের ফল নিয়ে যে শাসকদলের নানা মহলে অসন্তোষ রয়েছে তা স্পষ্ট কালনায়। তাই একদিকে ভোট মিটতেই শহরের নেতাদের রাশ টেনেছেন জেলা স্তরের নেতারা, আরেক দিকে সাংগঠনিক রদবদলের ভাবনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বোর্ড গঠনের বিষয়ে জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুকে একটি বৈঠক ডাকতে বলেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০২:৫৭

নেতারা প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও পুরভোটের ফল নিয়ে যে শাসকদলের নানা মহলে অসন্তোষ রয়েছে তা স্পষ্ট কালনায়। তাই একদিকে ভোট মিটতেই শহরের নেতাদের রাশ টেনেছেন জেলা স্তরের নেতারা, আরেক দিকে সাংগঠনিক রদবদলের ভাবনাও শুরু হয়ে গিয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বোর্ড গঠনের বিষয়ে জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুকে একটি বৈঠক ডাকতে বলেছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় কালনা শহরে সেই বৈঠক হয়। সেখানে দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করা থেকে শুরু করে জয়ী প্রার্থীদের বেশ কিছু বিষয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

দলের কর্মীরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই পুরসভা গঠনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত চার জন পুরপ্রধানের কুর্সি চেয়ে দলের বিভিন্ন স্তরে সুপারিশ শুরু করেছেন বলেও খবর। এমনকী এক জয়ী প্রার্থীর এক আত্মীয় তো ফল বেরেনোর পরের দিন থেকেই কলকাতায় হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন বলে দাবি স্থানীয় নেতাদের। আর রাস্তাঘাটে, চায়ের দোকানে আলোচনা তো রয়েইছে। বলা বাহুল্য, তা নানা নেতার নামও ভেসে বেড়াচ্ছে। যদিও দলের জেলা সভাপতি স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘হাটে বাজারে, কালনার বাতাসে অনেক কিছু ভেসে বেড়াচ্ছে তা জানি। তবে এ ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে দল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরাই পদে আসুন না কেন, পুরসভার লক্ষ্য হবে সাধারণ মানুষের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজ করা।’’ যদিও নেতাদের এই ক্রমাগত তদ্বিরে দলের স্বার্থের চেয়ে গোষ্ঠীস্বার্থ বেশি প্রাধান্য পেয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় কর্মীরাই। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে উপরমহলেও।

বোর্ড গঠনের সঙ্গে শহরে দলের সংগঠন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরে। গত পাঁচ বছরে বারবার গোষ্ঠীকোন্দলের নানা ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। নেতারা মেনেও নিয়েছেন কিছু ঘটনা। কর্মীরাই জানাচ্ছেন, নানা গোষ্ঠীর নানা কার্যালয়, একের অনুষ্ঠানে অন্যের সামিল না হওয়ায় দিন দিন বেড়েছে। ফলে ভোটের আগে মিছিল ভরাতে হয়েছে শহরের বাইরের লোক দিয়ে। এই লোক আনার প্রতিযোগিতা শহরবাসীর মনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলেও তৃণমূলের একাংশের দাবি। এছাড়া পুরভোটের আগের রাত থেকে শহরে বহিরাগতদের ঢোকা এবং পরে দিন বুথে তাদের দাপট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। সবমিলিয়ে একে অন্যকে আক্রমণ করতে গিয়ে দলের কিছু নেতার লক্ষ্য নড়ে গিয়েছে এবং যার প্রভাব নিবার্চনে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন দলের উপরতলার নেতারাই। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘ইতিমধ্যেই তিন নেতাকে সাবধান করা হয়েছে। তাদের পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এরপর অনৈতিক কোন কাজে জড়িয়ে পড়লে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’’ ওই নেতার আরও দাবি, ‘‘সামনে বিধানসভা ভোট। চেষ্টা চলছে দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার।’’ একই সঙ্গে শহর থেকে বেশ কিছু নতুন মুখ তুলে আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, যাঁদের স্বচ্ছ ইমেজে দলের ইমেজটাও বদলাবে বলে তাঁর আশা।

রবিবার সন্ধ্যার বৈঠকে হাজির ছিলেন কালনার ১২ জন জয়ী প্রার্থী, পুরভোটের দায়িত্বে থাকা দুই পর্যবেক্ষক দেবু টুডু ও প্রণব রায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রার্থীদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখার উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তোলাবাজি, পুকুর ভরাট, ঠিকাদারদের সঙ্গে কোনওরকম আঁতাতের কথা জানা গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে ভাবী কাউন্সিলরদের। যদিও প্রণববাবু বা দেবুবাবুর কেউই এ নিয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করতে চাননি।

kalna municipality kalna tmc leaders kalna tmc leader lobbying kalna tmc goup rivalry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy