স্ত্রী আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে খুনের ঘটনায় এ বার কাটোয়া থানার পুলিশ তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করল। তাঁকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে পুলিশ সাত দিনের হেফাজতের আবেদন জানায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মিতা দাস নামে এক বধূ তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছেন বলে অভিযোগ। বধূকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় বুধবার তাঁর প্রেমিক অভিজিৎ বাগদিকেও গ্রেফতার করে কাটোয়া থানার পুলিশ। তাঁকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে পুলিশ সাত দিনের হেফাজতের আবেদন জানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিতা নামে ওই বধূ একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। প্রায়ই স্বামীকে ছেড়ে পালিয়ে যেতেন অন্য পুরুষদের সঙ্গে, যদিও পরিবার তাঁকে বারবার ফিরিয়ে আনত। বছর দেড়েক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে মিতার সঙ্গে পরিচয় হয় নানুরের বাসিন্দা অভিজিতের। অল্প সময়েই সম্পর্ক গাঢ় হয় এবং দু’জনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এই প্রেমের সম্পর্কের কথা জানাজানি হতেই দাম্পত্য জীবনে শুরু হয় অশান্তি। অভিযোগ, মিতার স্বামী মহাদেব দাস তাঁদের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় তাঁকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন মিতা এবং অভিজিৎ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জামাইষষ্ঠীর দিন মিতা বাপেরবাড়ি যাওয়ার অজুহাতে বেরিয়ে কাটোয়ার একটি হোটেলে অভিজিতের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেই তাঁরা খুনের ছক কষেন। অভিজিৎ কার্বলিক অ্যাসিড কিনে দেন মিতাকে। মহাদেব ও তাঁদের দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মিতা। খুনের দিন রাতে প্রথমে মদ জোগাড় করে তিনি, তার পর তাতে মিশিয়ে দেন অ্যাসিড। সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে স্বামীকে সেই মদ খাওয়ান মিতা। অভিযোগ, কিছু ক্ষণের মধ্যেই মহাদেব অসুস্থ হয়ে বাড়ির উঠনে পড়ে গেলে বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁকে অচৈতন্য করেন তাঁর স্ত্রী। এর পর ঘরে নিয়ে এসে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন মিতা। হত্যার পরে রক্ত মুছতে গোবর ব্যবহার করা হয়। এর পর প্রেমিককে ফোন করে জানান তাঁর স্বামীর মৃত্যুর কথা। পরের দিন সকালে মিতা পরিবারের সকলকে জানান, মহাদেব স্ট্রোকে মারা গিয়েছেন। কিন্তু মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন ও রক্ত দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। কাটোয়া থানার পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মিতাকে আটক করে। জেরা চলাকালীন মিতা খুনের কথা স্বীকার করলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার দুই দিনের মধ্যেই তাঁর প্রেমিক অভিজিৎকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো ঘটনার পুনর্নির্মাণ করছে তারা এবং সেই মতো তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।