Advertisement
২০ মে ২০২৪
WB Municipal Election

WB Municipal Election 2022: কংক্রিটের ভিড়ে মাঠ হারিয়েছে, ক্ষোভ

শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের বেশির ভাগ জায়গাতেই খেলাধুলো করার জায়গা নেই। বহু বছর আগে তৈরি হওয়া একটি স্টেডিয়াম আছে।

অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়াম।

অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়াম। নিজস্ব চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:১৫
Share: Save:

ভাগীরথীর পাড়ে শহরটি তৈরি হয়েছে বহু আগে। লোকসংখ্যা বেড়েছে। পরিকাঠামোও তৈরি হয়েছে ধাপে ধাপে। কিন্তু খেলার মাঠ বা পার্ক তৈরির দিকে নজর পড়েনি কারও। করোনা-কালে যখন স্বাস্থ্য সঙ্কটে, তখন শরীরচর্চা থেকে পড়াশোনা সবই খোলা জায়গায় করার জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের আক্ষেপ, বয়স্কদের বসে গল্প করা থেকে শিশুদের খেলাধুলো কোনও কিছুর জায়গা নেই শহরে।

শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের বেশির ভাগ জায়গাতেই খেলাধুলো করার জায়গা নেই। বহু বছর আগে তৈরি হওয়া একটি স্টেডিয়াম আছে। কিন্তু তারও পরিকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। উল্টে বেশ কিছু খেলার মাঠে মাথা তুলেছে নির্মাণ। বাম আমলে পুরনো বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নিমতলা মাঠে ইনডোর স্টেডিয়াম এবং সুইমিং পুল তৈরি হয়েছিল। যদিও টিনের আচ্ছাদনে ঘেরা ওই স্টেডিয়ামে কোনও দিনই খেলার পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। কালীনগর পাড়া এলাকার হস্টেল মাঠে একসময় প্রতিদিন বসত ফুটবলের আসর। পরে, সে মাঠের বড় অংশ জুড়ে কালনা কলেজের মহিলা হস্টেল তৈরি হয়। বন্ধ হয় খেলা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামের মাঠ সকলের জন্য খোলা ছিল। ক্রীড়া দফতর মাঠটিকে নতুন করে সাজানোর পরে, ফুটবলের প্রশিক্ষণ এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু টুর্নামেন্টের জন্যই শুধু মাঠ ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া কাঠিগঙ্গার মাঠ এবং রাজবাড়ি মাঠে খেলোয়াড়েরা অনুশীলন করতে পারেন। খেয়াঘাটের কাছেও একটি মাঠ আছে। তবে অল্প বৃষ্টিতেই সেখানে জল জমে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মাঠের অভাবে অনেক ওয়ার্ডের খেলোয়াড়েরা ফুটবল, ক্রিকেট অনুশীলন করতে পারেন না।

ক্রীড়া প্রেমী পিন্টু সরকারের দাবি, ‘‘মাঠ না থাকলে খেলোয়াড় তৈরি হয় না। সেই কারণে শহরে কোনও খেলার টুর্নামেন্ট হলে বাইরের ছেলেদের বেশি করে খেলতে দেখা যায়।’’ আর এক বাসিন্দা প্রলয় মণ্ডলও বলেন, ‘‘কোনও ওয়ার্ডে এখন আর মাঠ করার মত জায়গা নেই। সবই কংক্রিটের ভিড়। পুরসভার উচিত, শহরের বাইরে জমি কিনে খেলার মাঠ তৈরি করা।’’

শিশুদের জন্য পুরসভার একটি পার্কে টয়ট্রেন, দোলনার মতো নানা পরিকাঠামো ছিল। কিন্তু একটি অগ্নিকাণ্ডের পরে সেই পার্ক বন্ধ। বছর দুয়েক পেরিয়ে গেলেও পার্কটিকে আর সাজানো হয়নি, ক্ষোভ অনেকেরই। স্থানীয় বাসিন্দা শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহরের আরও দুটি জায়গায় শিশুদের খেলার জন্য কিছু উপকরণ আছে, তবে সেখানে পরিবেশ ভাল না। সবুজ মাঠ ছাড়া শিশুরা বড় হবে কী ভাবে!’’

সিপিএমের কালনা শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘একটা মাত্র স্টেডিয়ামেও সব সময় খেলাধুলা করা যায় না। খেলার মাঠ এবং ভাল মানের পার্ক তৈরি করতে পুরসভা যে ব্যর্থ, তা প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে।’’ বিজেপির কালনা নগর কমিটির সভাপতি সৌরভ রায় বলেন, ‘‘মাঠ তৈরি করতে পুরসভা ব্যর্থ বলেই শহরে খেলোয়াড়দের খরা চলছে।’’

যদিও কালনা পুরসভার বিদায়ী প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা আনন্দ দত্ত বলেন, ‘‘খেলার মাঠের জন্য বড় জমি শহরে নেই। তবে ভাগীরথীর কিছু অংশ বিস্তীর্ণ চর দেখা দিয়েছে। পোর্ট ট্রাস্টের সঙ্গে কথা বলে চরের জমিতে খেলার মাঠ এবং ইকো-পার্ক তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। নমামী গঙ্গা প্রকল্পে একটি পরিকল্পনাও পাঠানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

WB Municipal Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE