Advertisement
E-Paper

সহকর্মীদের প্রতিবাদ উড়িয়ে ফের কর্মবিরতি

কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত শুনে আপত্তি করেছিলেন অনেক আইনজীবীরাই। গরমে সরকারি দফতরে কাজ হলে আদালতেই বা হবে না কেন, সে প্রশ্নও তুলেছিলেন অনেকে। কিন্তু সোমবার দীর্ঘ বাগবিতণ্ডা, ‘প্রতিবাদী’ আইনজীবীদের ঘেরাও কররে রাখার পরে পাঁচ দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০২:১০
আইনজীবীদের ঘিরে ধরে বচসা।—নিজস্ব চিত্র।

আইনজীবীদের ঘিরে ধরে বচসা।—নিজস্ব চিত্র।

কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত শুনে আপত্তি করেছিলেন অনেক আইনজীবীরাই। গরমে সরকারি দফতরে কাজ হলে আদালতেই বা হবে না কেন, সে প্রশ্নও তুলেছিলেন অনেকে। কিন্তু সোমবার দীর্ঘ বাগবিতণ্ডা, ‘প্রতিবাদী’ আইনজীবীদের ঘেরাও কররে রাখার পরে পাঁচ দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার পর্যন্ত আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করবেন।” গরমের কষ্টের আড়ালে চলে যায় বিচারপ্রার্থীদের দীর্ঘ অপেক্ষা, মামলার পাহাড় জমে যাওয়া সমস্তই।

এমনিতেই বর্ধমান জেলা আদালতে বিচারপ্রার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় বসার জায়গা নেই, পানীয় জলের সুব্যবস্থা নেই। আদালতের লক আপে অভিযুক্তদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে পরিজনদের ঠা ঠা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তবু ন্যূনতম বিচার পাওয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোদ-গরম উপেক্ষা করে ‘উকিলবাবু’দের কাছে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। কিন্তু গরমের দোহাই দিয়ে সেই ‘উকিলবাবু’রাই যখন কর্মবিরতি নেন, তখন মুশকিলে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা। যেমন, বরাকর থেকে এ দিন আদালতে এসেছিলেন সোনামনি দাস, দুর্গাপুরের সগরভাঙা থেকে এসেছিলেন গোলাম মোস্তাফারা। তাঁরা বলেন, “এই গরমের মধ্যে আদালতে ছুটে এলাম। কিন্তু এসে তো আতান্তরে পড়ে গেলাম। জানতে পারলাম ফের আইনজীবীরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। আমাদের মামলা ফের পিছিয়ে গেল।” কর্মবিরতির ফলে পিছিয়ে গিয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনার রায় সমেত অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা। পুলিশ ফাইলেও অভিযুক্তদের হয়ে কোনও আইনজীবী ওকালতনামায় সই করেননি। ফলে জামিনযোগ্য মামলাতেও অনেককে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়েছে বলে আইনজীবীদের একাংশ জানিয়েছেন। কর্মবিরতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ল ক্লার্করাও। তাঁরা মনে করেন, এ ভাবে বিচার ব্যবস্থাকে পঙ্গু করার কোনও অধিকার নেই আইনজীবীদের।

চাপের মুখে পড়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও অনেক আইনজীবীই এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘এর আগেই দু’দফায় ৬ দিন কর্মবিরতি পালন করেছি। এরপরে আর কর্মবিরতি পালন করার কোনও অজুহাত হয় না। এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ অনেকে আবার বলেন, ‘‘এই গরমের মধ্যে আদালতের বিচারক থেকে কর্মীরা সবাই কাজ করছেন। সব দোকানপাট খোলা রয়েছে। চিকিৎসকরা পরিষেবা দিচ্ছেন। অথচ আমরা গরমের অজুহাত দিয়ে কাজ বন্ধ করে রাখছি। যে সব বিচারপ্রার্থীদের মাধ্যমে আমরা আয় করি, পরোক্ষ ভাবে আমরা তাঁদের ক্ষতি করছি। এ জিনিস চলতে পারে না।” প্রতিবাদীদের অন্যতম ‘মুখ’ আইনজীবী কমল দত্তকে এ দিন ঘিরে ধরে সিদ্ধান্ত না মানার কৈফিয়ত চাইছিলেন কয়েকজন আইনজীবী। কমলবাবু চাপের মাথাতেও বলেন, “শনিবারের বৈঠকেও আমি কাজ করব বলেছি।” একই কথা জানিয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এ দিন সন্ধ্যায় দু’জনেই বলেন, ‘‘সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য হলাম।”

lawyer burdwan court medical college journalist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy