Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

লক্ষ্মীর দরে ঘরেও লক্ষ্মী

সব মণ্ডপ থেকে দুর্গা মূর্তি বিসর্জন হয়নি এখনও। তার মধ্যেই ঘণ্টা বেজে গিয়েছে লক্ষ্মীপুজোর। দ্বাদশী থেকেই প্রতিমা, পুজোর আনুষাঙ্গিক সামগ্রী কিনতে ভিড় জমেছে।

রাত পোহালেই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। মূর্তি গড়তে ব্যস্ত বর্ধমানের উদয়পল্লি পালপাড়ার এক শিল্পী। নিজস্ব চিত্র।

রাত পোহালেই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। মূর্তি গড়তে ব্যস্ত বর্ধমানের উদয়পল্লি পালপাড়ার এক শিল্পী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১১
Share: Save:

সব মণ্ডপ থেকে দুর্গা মূর্তি বিসর্জন হয়নি এখনও। তার মধ্যেই ঘণ্টা বেজে গিয়েছে লক্ষ্মীপুজোর। দ্বাদশী থেকেই প্রতিমা, পুজোর আনুষাঙ্গিক সামগ্রী কিনতে ভিড় জমেছে। পুজোর দিন বা আগের দিন দাম আকাশ ছোঁয়ার ভয়ে বেশির ভাগ মানুষই আগে প্রতিমা কিনে ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন। ভিড় দেখে হাসি ফুটছে প্রতিমা শিল্পীদের মুখেও।

এমনিতেই এ বছর বৃষ্টি পুরোপুরি পিছু না ছাড়ায় মূর্তি শুকনো নিয়ে চিন্তায় ছিলেন মৃৎশিল্পীরা। পুজোর মধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় লক্ষ্মী পুজোর বিকিকিনি নিয়ে চিন্তা বাড়ে আরও। যদিও একাদশী থেকে আকাশ পরিষ্কার থাকায় শুরুর দিকটা অন্তত বিক্রিবাটা ভালই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এমনকী, আশঙ্কা উড়িয়ে অন্য বারের প্রতিমার দাম অন্তত দশ থেকে পনেরো শতাংশ বেড়ছে বলেও দাবি করছেন অনেকে।

বর্ধমান শহরের রানিগঞ্জ বাজার তো বটেই বিসি রোডের দু’পাশেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ছোট-বড় লক্ষ্মী প্রতিমা, সরায় আঁকা লক্ষ্মী নিয়ে বসেছিলেন শিল্পীরা। উদয়পল্লি পালপাড়ায় আবার প্রতিমায় শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিতে ব্যস্ত শিল্পী। চলছে বরাত পাওয়া বড় মূর্তি পৌঁছে দেওয়ার তোড়জোড়ও। হাতের কাজ গুছোতে গুছোতেই উদয়পল্লির বাসিন্দা, মৃৎশিল্পী গোবিন্দ পাল জানান, লক্ষ্মীর বাজার এ বার ভালই। মূর্তি এবং সরায় আঁকা লক্ষ্মী দুইই গড়েন তিনি। কাজ করতে করতে গোবিন্দবাবু জানান, ও পার বাংলার অনেকেই পূর্ববঙ্গীয় রীতি মেনে সরায় আঁকা লক্ষ্মীর পুজো করেন। প্রতিবারই ভালই চাহিদা থাকে। বিশেষত, কাঞ্চননগর, রথতলা, ছোট নীলপুর এবং বড়নীলপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে হাতে আঁকা প্রতিমার চল বেশি। সরায় আঁকা প্রতিমার দাম এ বছর ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিকোচ্ছে। তবে ছাঁচের মূর্তির দাম তুলনামূলক ভাল মিলছে বলে জানান তিনি। গোবিন্দবাবুর দাবি, আগের বারের থেকে মূর্তি প্রতি ১০ থেকে ৫০ টাকা অবদি বেশই দাম মিলছে। কার্জন গেট চত্বরে প্রতিমা নিয়ে বসেছেন কার্তিক সুর। তিনি বলেন, ‘‘এ বার বিক্রি ভাল হবে আশা করছি। প্রতিমার দাম সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা। উচ্চতা হিসেবে দাম ঠিক করা হয়েছে। গত বার ৪০ টাকাতেও ছাঁচেরপ্রতিমা বিক্রি করতে হয়েছে। তবে এ বার অন্তত দশ শতাংশ দাম বেশি পাব বলে মনে হচ্ছে।’’ অন্য শিল্পীরাও জানান, মূর্তি তৈরির সামগ্রী, রঙের দাম যে ভাবে বেড়েছে তাতে দামে এটুকু না বাড়লে ভাল মূর্তি গড়ায় মুশকিল।

একই ছবি কালনাতেও। শহরের চকবাজারে বৃহস্পতিবার থেকেই মূর্তি নিয়ে বসে পড়েছেন অনেকে। প্রতিমা তৈরির সামগ্রীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে শিল্পীদের দাবি। পাটুলির এক শিল্পী অর্ঘ্য পাল জানান, ১০০ থেকে ১৫০০ পর্যন্ত দামে মূর্তি বিক্রি হচ্ছে। চকবাজারেই দেখা মেলে ক্রেতা গৌতম ঘোষের। তিনি জানান, আগের বার ছোট মূর্তি ১০০ টাকায় কিনেছিলেন। এ বার তা ১২০-২৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

কাটোয়াতেও সরায় আঁকা লক্ষ্মী বিকোচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। ছাঁচের একটু বড় মূর্তির দাম দুশো থেকে চারশো টাকা। মূর্তি প্রতি দাম ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। লেনিন সরণীর এক দশকর্মার দোকানের মালিক বিশ্বজিৎ পাল জানান, মৃৎশিল্পীরা দাম বাড়িয়েছেন। সেই মতো দাম ফেলতে হচ্ছে।

আবার তিন-চার ফুটের প্রতিমার দাম তেমন বাড়েনি বলে দাবি করছেন মৃৎশিল্পীরা। খোকন পাল, সুজিত পালেরা বলেন, ‘‘৫০০ টাকার মধ্যে দাম রাখতে হচ্ছে। না হলে ক্রেতা পাওয়া মুশকিল হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Laxmi Idol market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE