গ্রামের রাস্তা দিয়ে বেপরোয়া ভাবে চলছে বালিবোঝাই ট্রাক, ট্র্যাক্টর। রেষারেষি বাড়ছে বলেও অভিযোগ। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন খণ্ডঘোষের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। বুধবার ওই এলাকায় একটি ট্রাক জমিতে উল্টে যাওয়ায় ক্ষোভ বেড়েছে। সম্প্রতি এলাকাবাসী খাদান থেকে বালিবোঝাই যানবাহন যাতায়াতের জন্য প্রশাসনের কাছে বিকল্প রাস্তা তৈরি করারও দাবি জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের দাবি, বিকল্প রাস্তাটি তৈরির
পরিকল্পনা রয়েছে।
ওসি (খণ্ডঘোষ), বিডিও (খণ্ডঘোষ) ও জেলাশাসককে পাঠানো ৯০ জনের সই-সম্বলিত চিঠিতে জানানো হয়েছে, তাঁরা সানিঘাট, গোলা, বোনসালিপুর, বীচখাঁড়া, তিলগঙ্গা, বাগপাত্র, মাঝপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খণ্ডঘোষ থেকে বনমালীপুর যাতায়াতের রাস্তায় ওই গ্রামগুলি পড়ে। তাঁদের যাতায়াতের ওই একটাই রাস্তা। পড়ুয়ারাও ওই পথেই স্কুলে যায়। চিঠিতে জানানো হয়েছে, ওই রাস্তায় যাতে বালি বোঝাই গাড়ি যাতায়াত না করে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। খাদানের রাস্তা দিয়েই গাড়িগুলি যাতে যাতায়াত করে সেটাও নিশ্চিত করা দরকার। গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে ওই চিঠিতে লোদনা পঞ্চায়তের সদস্য রাধারানি বাগ, চন্দন হাজরা, সাথী মণ্ডল, সবরী ডলের মতো কয়েক জন সই করেছেন।
গ্রামবাসীর দাবি, সরকারি অনুদানে বাড়ি তৈরি শুরু হতেই বালির গাড়ির বেপরোয়া যাতায়াত বেড়েছে। ওই পঞ্চায়েতের সদস্যদের দাবি, সারা দিনে অন্তত দেড়শো থেকে দুশো’টি ট্রাক গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছে। রাস্তার ধারেই বাড়ি রয়েছে। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা অমূলক নয়।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষের অভিযোগ, “সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য একটি চালানেই চার-পাঁচটি ট্রাক বালি তুলে স্থানীয় ভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। চালানের মেয়াদ নির্দিষ্ট সময় থাকায় বেপরোয়া ভাবে ট্রাক গ্রামের ভিতরে যাতায়াত করছে।” কয়েক দিন আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্ব থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন।
এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডল, বিডিও (খণ্ডঘোষ) বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। শাসক দলের বিধায়ক (খণ্ডঘোষ) তথা ওই এলাকার বাসিন্দা নবীন বাগের দাবি, “আমার কাছে কেউ আসেনি। এলে নিশ্চয়ই দেখতাম।”
আর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, ব্লক সভাপতি (খণ্ডঘোষ) অপার্থিব ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের কাছে গিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। প্রশাসনই সমাধান করবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)