মহাসমারোহে: বর্ধমানের কাঞ্চননগরে দুর্গাপুজোর প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা। সোমবার। ছবি: উদিত সিংহ
দশমীর দু’দিন পরেও পুজোর আমেজ বর্ধমানে।
কলকাতার রেড রোডের মত বর্ধমানেও বিসর্জনের শোভাযাত্রা হল সোমবার। পুজোকে ঘিরে উদ্যোক্তাদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলে, এ দিন বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও তা থাকল।
পূর্ব বর্ধমানে কাটোয়ার কার্তিক পুজো, দাঁইহাটে রাস উৎসবে বিসর্জনের রাতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার চল রয়েছে। অন্য জেলার নবদ্বীপ-শান্তিপুরে রাসের সময়ে, চন্দননগরে জগদ্ধাত্রীর পুজোর বিসর্জনের রাতে শোভাযাত্রা হয়। কিন্তু বর্ধমান শহরে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রার রেওয়াজ ছিল না। উদ্যোক্তারা উৎসব শেষে নিজের মতো করে স্থানীয় পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করতেন।
গত বছর রেড রোডে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছিল সরকারের তরফে পুরস্কার পাওয়া পুজোগুলি। তা দেখে বর্ধমানের জিটি রোডে ওই রকম শোভাযাত্রা করার দাবি জানিয়েছিলেন পুজো উদ্যোক্তারা। জেলা প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে রাজিও ছিল। কিন্তু প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায়-জেলায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ ভাবে বিসর্জনের শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য গররাজি হয়। শহরের মূল এলাকায় বিসর্জনের শোভাযাত্রার বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
এর পরেই নিজের এলাকা, কাঞ্চননগর-উদয়পল্লিতে বিসর্জনের শোভাযাত্রা করতে উদ্যোগী হন বর্ধমানের পুরপিতা পরিষদের সদস্য খোকন দাস। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই শোভাযাত্রা করার জন্য এগিয়ে যাই। পুজো কমিটির সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা ওই শোভাযাত্রায় যোগ দেবেন বলে জানান। জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি নিয়ে প্রথম বার বিসর্জনের শোভাযাত্রা করতে পেরেছি। আশা করি, পরের বার আরও পরিকল্পিত ভাবে তা করতে পারব।”
এ দিন বিকেলে কাঞ্চননগরের কঙ্কালীতলার মাঠে স্থানীয় ১৭টি পুজো কমিটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে হাজির হয়ে যায়। সেখানে একটি মঞ্চে বিচারকেরা ছিলেন। এসেছিলেন জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব প্রমুখ। প্রতিটি পুজো উদ্যোক্তা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন। তার পরে খর্গেশ্বরপল্লি-উদয়পল্লি-কাঞ্চননগর বাজার-ডিভিসি সেতু হয়ে রথতলা পর্যন্ত শোভাযাত্রা চলে। প্রায় তিন কিলোমিটার এই রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মানুষজন। শোভাযাত্রায় ঢাক-ব্যান্ড-তাসা-আদিবাসী নৃত্য-রণপার সঙ্গে ট্যাবলোয় ধরা হয়েছিল সরকারি নানা প্রকল্পের প্রচারও। মহাত্মা গাঁধীর জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা থেকে আসন্ন অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপের প্রচার, ছিল সবই। খর্গেশ্বরপল্লির তপন রায় থেকে বেলপুকুর কিশোর সঙ্ঘের রমা রায়দের কথায়, ‘‘কত মানুষ বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন! এই উদ্যোগে সামিল হতে পেরে আমরা খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy