Advertisement
E-Paper

মলয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক, নেত্রীর বার্তা জিতেন্দ্রকে

গত বছর দুর্গাপুরে পুরভোটে জেলার বাকি নেতাদের ময়দানে নামতে দেখা গেলেও মলয়কে বিশেষ কোনও ভূমিকায় দেখা যায়নি। কিন্তু তার পরেই ফের পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, জিতেন্দ্রর নানা আচরণে ক্ষুব্ধ দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে আবার মলয়ের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০২:২৫
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

স্থানীয় রাজনীতিতে তাঁদের অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে নানা সময়ে। আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সেই দুই নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও মলয় ঘটকের মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটাতে বার্তা দিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার কলকাতায় বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেন্দ্রর উদ্দেশে বলেন, ‘‘মলয়ের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক তৈরি কর।’’

খনি-শিল্পাঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। মলয় দলের পুরনো নেতা। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলে রয়েছেন তিনি। জিতেন্দ্র তৃণমূলে যোগ দেন কিছু দিন পরে। গোড়া থেকে দলের সংগঠন তৈরিতে সক্রিয় ছিলেন মলয়ের ভাই দেবাশিস ঘটক। সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ ছিল মলয়ের হাতে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের পরে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ওই ভোটে বিজেপি-র বাবুল সুপ্রিয়ের কাছে তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন বড় ব্যবধানে হারায় আঙুল ওঠে মলয়ের দিকে। মন্ত্রিত্বও খোয়াতে হয় তাঁকে। সেই সময় থেকে সংগঠনে বড় দায়িত্ব পান জিতেন্দ্র এবং ভি শিবদাসন। ২০১৫ সালে আসানসোল পুরভোটে প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে সব কিছুই হয় তাঁদের মত অনুযায়ী। ভোটে জেতার পরে মেয়র হিসেবে জিতেন্দ্রর নাম ঘোষণা করা হয়। পুরবোর্ডে জিতেন্দ্রর অনুগামী বলে পরিচিতরাই নানা গুরুত্বপূর্ণ পদ পান। এর পরে মলয় ও জিতেন্দ্রর গোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা যায়।

২০১৬-র বিধানসভা ভোটের সময়েও সংগঠনের রাশ ছিল জিতেন্দ্র-শিবদাসনের হাতে। পাণ্ডবেশ্বর থেকে জিতে বিধায়ক হন জিতেন্দ্র। ভোটের পরে নানা এলাকার দলের ব্লক কমিটি গঠনেও মূল ভূমিকা ছিল তাঁদের। এর পাশাপাশি সিন্ডিকেট-দৌরাত্ম্যের অভিযোগে আসানসোলে নতুন আদালত ভবনের থমকে যাওয়া কাজ ফের চালু করা, বাবুল সুপ্রিয়ের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীদের মলয়ের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি নিয়ে গোলমাল মেটানো— নানা ক্ষেত্রেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় জিতেন্দ্র ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের।

গত বছর দুর্গাপুরে পুরভোটে জেলার বাকি নেতাদের ময়দানে নামতে দেখা গেলেও মলয়কে বিশেষ কোনও ভূমিকায় দেখা যায়নি। কিন্তু তার পরেই ফের পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, জিতেন্দ্রর নানা আচরণে ক্ষুব্ধ দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে আবার মলয়ের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন। সে খবর পৌঁছয় দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছেও। মাস কয়েক আগে দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মলয়কে বেশ কিছু বিষয়ে দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি মন্ত্রী হিসেবেও তাঁর দায়িত্ব বেড়েছে।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এক সঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। মলয়বাবু অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তিনি রাজ্যের মন্ত্রী। অনেক দিন ধরে দলের কাজ করছেন। তাঁর কাছে পরামর্শ নিলে তো ভালই হবে।’’ মলয় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি। তবে জিতেন্দ্রর প্রতিক্রিয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ঠিক আছে। ভাল কথা।’’ দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের বক্তব্য, ‘‘নেত্রীর নির্দেশমতোই চলা উচিত দলের সকলের।’’

Mamata Banerjee West Bengal Chief minister Netaji Indoor Stadium TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy