Advertisement
E-Paper

‘মেয়েটাকে বড় করার স্বপ্ন ছিল’

পুলিশের অনুমান, মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় এভিবি হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মিতাকে ঘরে ঢুকে খুন করে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের অমিত। পরে সে নিজেও আত্মঘাতী হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫৫
মঙ্গলবার নিউ টাউনশিপ থানার যে বাড়িতে এই ঘটনা,  সেখানে জানলা দিয়ে উঁকিঝুঁকি পড়শিদের।

মঙ্গলবার নিউ টাউনশিপ থানার যে বাড়িতে এই ঘটনা, সেখানে জানলা দিয়ে উঁকিঝুঁকি পড়শিদের।

ভেবেছিলেন মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। যুবকের কাস্তের কোপে মেয়ে মিতা কুণ্ডুর (১৬) মৃত্যুর পরে নাগাড়ে এই কথাটাই জানাচ্ছিলেন তাঁর মা মমতাদেবী। অমিত শীট (২৪) নামে ওই যুবকের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে হারাতে হবে ভাবেননি মিতার বাবা কৃষ্ণবাবুও। পাশাপাশি, ভরদুপুরে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঘটনাস্থল দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার গণতন্ত্র কলোনিতে।

পুলিশের অনুমান, মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় এভিবি হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মিতাকে ঘরে ঢুকে খুন করে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের অমিত। পরে সে নিজেও আত্মঘাতী হয়। মিতাদের বাড়িতে অমিতকে যিনি ঢুকতে দেখেছিলেন, সেই স্থানীয় বাসিন্দা তথা দোকানদার জবা চক্রবর্তীর সন্ধ্যাবেলাতেও যেন হুঁশ ফিরছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেটাকে ওদের বাড়িতে ঢুকতে দেখলাম। সেই সময়েই দেখি, মিতাদের বাড়ির চালে শুকোতে দেওয়া একটা বিছানার চাদর পড়ে গিয়েছে। মিতাকে ডাকলে ও সাড়াও দেয়। কিন্তু চাদর কুড়োতে আর বাড়ির বাইরে আসেনি। তখনও বুঝতে পারিনি...।’’

এই ঘটনার মিনিট দশেকের মধ্যে মিতার জ্যাঠা সুভাষ কুণ্ডুর চিৎকার শুনে কিছু একটা ঘটেছে, বুঝতে পারেন কাকলি মণ্ডল, জবাদেবী-সহ অন্য পড়শিরা। তাঁরা বাড়ির জানলায় উঁকি দিয়ে দেখেন, মিতার রক্তাক্ত দেহ। কাকলিদেবীর কথায়, ‘‘জানলা দিয়ে দেখি, রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। গা-হাত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল যেন।’’ কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিড় জমে যায় এলাকায়।

ঘটনার সময়ে পেশায় ‘আয়া’ মিতার মা মমতাদেবী বিধাননগরে কাজ করছিলেন। খবর পেয়ে দ্রুত ফিরে আসেন বাড়িতে। ফেরেন পেশায় কাঠমিস্ত্রি কৃষ্ণবাবুও। মমতাদেবী বলেন, ‘‘ও আমাদের একমাত্র সম্বল ছিল। ওকে পড়াশোনা করিয়ে অনেক বড় করার স্বপ্ন ছিল। তাই এত পরিশ্রম করতাম। সব শেষ হয়ে গেল।’’ পাশে থাকা কৃষ্ণবাবুও বলেন, ‘‘ওই যুবকের সঙ্গে আমাদের কোনও অশান্তি হয়নি। তার পরেও ছেলেটা এই মারাত্মক কাণ্ড ঘটাবে, বুঝতে পারিনি!’’

মিতার বাবা-মা জানিয়েছেন, মা-কে নিয়ে এক দিন দুর্গাপুরে তাঁদের বাড়ি এসেছিল অমিত। তবে স্বপন শিকদার নামে এক পড়শি বলেন, ‘‘এলাকায় ছেলেটাকে আগে দেখিনি। মেয়েটাকে বড় করে তুলতেই বাবা-মা খুব পরিশ্রম করতেন।’’ সন্ধ্যায় এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ঘটনার রেশ তখনও কাটেনি। অঞ্জু পাণ্ডে নামে এক পড়শি বলেন, ‘‘ভরদুপুরে সবার সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে পাড়ায়, বুঝতে পারিনি কেউই।’’

নন্দীগ্রামে অমিতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে মাধ্যমিক পাশ করার পরে নানা এলাকায় শ্রমিকের কাজ করত। মা ও দিদার সঙ্গে থাকত সে। অমিতের মা ও দিদা দু’জনেই পরিচারিকার কাজ করেন। অমিতের দুই দিদি রয়েছেন। দু’জনেই বিবাহিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পড়শির দাবি, দিন আটেক আগে অমিত তার ‘সম্পর্কের’ কথা জানিয়েছিল তাঁদের কাছে।

Mita Kundu Murder Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy