দিনমজুরি করেন সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর ছেলে। সম্বল মাটির দেওয়ালের উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর। সেটিও আবার শুক্রবার রাতে ভেঙে পড়ে। তৃণমূল পরিচালিত বল্লভপুর পঞ্চায়েতের বক্তারনগরে ১৫ নম্বর সংসদের সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য সৌমেন বাউরিকে সপরিবারেআশ্রয় নিতে হয়েছে গ্রামেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে। তাঁর আক্ষেপ, ২০২০-এ সরকারি প্রকল্পের ঘর করে দেওয়ার আবেদন জানানো হলেও তা মেলেনি। বিডিও (রানিগঞ্জ) শুভদীপ গোস্বামী জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৌমেনের সঙ্গে থাকেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও বোন। তাঁদের মাটির বাড়িতে রয়েছে একটি মাত্র কক্ষ। উপরে রয়েছে একটি চিলেকোটা। সৌমেন জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ির এক দিকের দেওয়াল ভেঙে যায়। আর একটি দেওয়ালে ফাটল ধরে। আতঙ্কিত হয়ে তাঁরা বাড়ির বাইরে চলে আসেন। পরে আশ্রয় নেন পাড়াতেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে। সৌমেনের দাবি, ২০১৮-এ পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন। পরে পঞ্চায়েতের তরফে সমীক্ষা করতে তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কিংবা বাংলা আবাস যোজনার সুযোগ তাঁর জোটেনি। ফি বছর বর্ষায় প্রাণ হাতে বাস করতে হয় মাটির ঘরে। জল আটকাতে ব্যবহার করতে হয় ত্রিপল।
ওই পঞ্চায়েতের ১৪ নম্বর সংসদের সিপিএম সদস্য সোনাই খানের অভিযোগ, ‘‘প্রকৃত দরিদ্রেরা আবাস প্রকল্পের সুযোগ যে পাননি, তা এই ঘটনায় ফের স্পষ্ট হল। আগে ২০২৪ সালে বক্তারনগর গ্রামে চারটি বাড়ি ভেঙেছিল। সেখানে কেউ থাকেন না। অন্যের বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। ক্ষতিপূরণ মেলেনি। বাড়িও তৈরি করে দেয়নি রাজ্য সরকার।’’ বল্লভপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সিধান মণ্ডলের আশ্বাস, গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তিনি দেখবেন। ব্লক প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আবেদনও জানাবেন।
বিডিও জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তথ্য পঞ্চায়েত বা স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে তাঁরাসংগ্রহ করেন। পরে বিপর্যয়ের মোকাবিলা দফতরের কাছে রিপোর্ট পাঠান। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সেটি নথিভুক্ত করে। তার পরে বাংলা আবাস প্রকল্পের সমীক্ষার সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই সব বাড়ির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, নাকি বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। তবে কত দিন পরে এই সমীক্ষা হয়, তা তিনিজানাতে পারেননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)