E-Paper

মেয়ে চন্দ্রযান ৩ অভিযানের দলে, টের পাননি মা-বাবাও

রিমার পড়াশোনা শুরু এই শহরেই। দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ হন শহরেরই বেসরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে। দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হন কলকাতার বেসরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৫
বাবা-মায়ের সঙ্গে রিমা ঘোষ।

বাবা-মায়ের সঙ্গে রিমা ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

চাকরির শর্ত, কী বিষয়ে কাজ করছেন, তা বলা যাবে না। তাই মেয়ে যে ইসরোর চন্দ্রযান ৩ অভিযানের সদস্য তা টের পাননি আসানসোলের চন্দনকুমার ঘোষ, শিবানী ঘোষ। তবে দেশের সাধারণ নাগরিকদের মতো তাঁরাও চোখ রেখেছিলেন টেলিভিশনে। কথা হয়েছে মেয়ে রিমার সঙ্গেও। অভিযানের সাফল্যে রিমাকে নিয়ে আনন্দে ভাসছে পড়শি থেকে পরিবার, সকলেই।

আসানসোলের দক্ষিণ হিলভিউ এলাকার মেয়ে রিমা। চন্দনেরা থাকেন একটি বহুতল আবাসনে। আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী এবং আসানসোল পলিটেকনিক কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ চন্দন বলেন, “অভিযানের সাফল্যের পরে যখন জানতে পারলাম, মেয়ে চন্দ্রযান ৩-এর সঙ্গে জড়িয়ে, তখন গর্ব আর আনন্দ, দু’টোই যেন আর বেশি হয়ে গেল। পুজোয় মেয়ে আসবে। ওর কাছে গল্প শুনব।” স্ত্রী শিবানী অসুস্থ। কার্যত শয্যাশায়ী। তবে মেয়ের প্রসঙ্গ শুনেই তাঁর চোখ চিকচিক করে উঠছে। চন্দ্রযান সাফল্যের সঙ্গে মেয়ে জড়িত থাকায় কেমন লাগছে জিজ্ঞাসা করা হলে ইশারা করেন। ভাল লাগার সে ইশারা বুঝিয়ে দেন পুত্রবধূ শ্রাবণী বিশ্বাস।

রিমার পড়াশোনা শুরু এই শহরেই। দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ হন শহরেরই বেসরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে। দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হন কলকাতার বেসরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিষয়ে মহারাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কলেজ থেকে বিটেক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমটেক। ২০০৮-এ যোগ দেন ইসরোয়। কিন্তু ইসরো কেন? বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে রিমা বলেন, “ছোট থেকেই আমার অন্যতম আগ্রহের বিষয় ছিল মহাকাশ। তাই ইসরোয় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করি। চাকরিটা হয়ে যাওয়ার পরে আরকিছু ভাবিনি।” তবে অভিযানের কী দায়িত্বে ছিলেন জিজ্ঞাসা করা হলে, রিমা জানান, তা চাকরির শর্ত অনুযায়ী বলা যাবে না। তবে বলেন, “এ বার আমরা যে সফল হবই, এমন একটা আত্মবিশ্বাস কাজ করছিল। ভীষণ খুশি আমি। কোটি-কোটি দেশবাসীর শুভেচ্ছা ছিল আমাদের সঙ্গে।”

কথায়-কথায় রিমা ফিরে আসেন আসানসোলের কথায়। পড়াশোনা ও কর্মসূত্রে অনেক দিন বাইরে থাকলেও ‘নিজের শহর’ বলতে এখনও বোঝেন আসানসোলকেই। আর তাই, ফোনেও আসানসোল শহর নিয়ে নানা খুঁটিনাটি প্রশ্নও করলেন সংবাদমাধ্যমকে। এ-ও জানালেন, পুজোর ছুটিতে আসানসোল আসবেন।

রিমার সাফল্যে খুশিতে ভাসছেন পড়শিরাও। তবে গোপনীয়তার কারণে কেউ আগাম কিছু আঁচ করতে পারেননি। শুক্রবার সকাল থেকে আনাগোনা বাড়ছে পরিচিতদের। বাবন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে তেমনই এক পড়শি বললেন, “বাড়ির কাছেই যে এমন এক জন মানুষ আছেন, এটা আগে থেকে কেউ কিছু জানতাম না। রিমা আমাদের, আমাদের শহরের নাম উজ্জ্বল করেছে।” রিমা-সহ দেশের বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদদের অভিনন্দন জানিয়েছেন শহরের অন্যতম ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক।

অন্ডাল: অন্ডাল বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্কুল প্রাঙ্গণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ) অংশুমান মুখোপাধ্যায় জানান, অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা মুখ্য বিদ্যালয় (প্রাথমিক) পরিদর্শক দেবব্রত পাল। নিজস্ব সংবাদদাতা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol ISRO

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy