E-Paper

হাতুড়ে ডাক্তারের বুদ্ধি, কানে আঠা দিয়ে রক্ত বন্ধের চেষ্টা, হাসপাতালে রোগী

হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্যামল চিকিৎসককে জানান, বুধবার সকালে কান পরিষ্কার করাতে তিনি সিঙ্গি গ্রামের মোড়ে এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৯
আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রোগী।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রোগী। প্রতীকী চিত্র।

রক্তক্ষরণ বন্ধে এক ব্যক্তির কানে পাইপের ফাটল সারাতে ব্যবহৃত আঠা গুঁজে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক হাতুড়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। কাটোয়ার কোয়ারা গ্রামের ওই ঘটনায় স্তম্ভিত চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাথায় ও কানে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে বৃহস্পতিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন শ্যামল প্রামাণিক নামে কোয়ারা গ্রামের এক বাসিন্দা। হাসপাতালের ‘ইএনটি’ বিশেষজ্ঞ ভাস্করজ্যোতি বর্মন দেখেন, তাঁর কানে গোঁজা রয়েছে শক্ত আঠাজাতীয় বস্তু, যা সাধারণত জলের পাইপের ফাটল বন্ধে ব্যবহার করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্যামল চিকিৎসককে জানান, বুধবার সকালে কান পরিষ্কার করাতে তিনি সিঙ্গি গ্রামের মোড়ে এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। কান পরিষ্কার করানোর সময় রক্তক্ষরণ শুরু হয়। প্রথমে তুলো দিয়ে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা হয়েছিল। তাতে কাজ না হওয়ায় ওই হাতুড়ে চিকিৎসক শ্যামলের কানে ওই পদার্থ গুঁজে দেন।

এ সব শুনে আর সময় নষ্ট করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দ্রুত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শ্যামলের কান থেকে বার করা হয় ওই বস্তু। কিন্তু, ততক্ষণে তাঁর কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এখন শ্যামলের অবস্থা স্থিতিশীল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্যামল তাঁদের জানান, বুধবার বিকেলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় কাটোয়া শহরে এসে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখান। তাঁর পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ভাস্করজ্যোতি বলেন, “কান থেকে রক্তপাত বন্ধ করতে এ ধরনের কাজ যে কেউ করতে পারে, তা এই প্রথম দেখলাম। অস্ত্রোপচার করে ওই পদার্থ বার করে দেওয়া হয়েছে। রোগী বিপদমুক্ত হয়েছেন। তবে তাঁর কানের পর্দার ক্ষতি হয়েছে। চিকিৎসা চলবে।” কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার শেখ সৌভিক আলমের প্রতিক্রিয়া, “চিকিৎসা বিজ্ঞানের এত অগ্রগতি সত্ত্বেও কিছু মানুষ এখনও সচেতন হননি। হাতুড়েকে দিয়ে কান পরিষ্কার করাতে গিয়ে বড় বিপদ ডেকে এনেছেন ওই ব্যক্তি। আমরা উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাঁর কানের পর্দা ঠিক করব।”

শ্যামলের স্ত্রী সঞ্চিতা প্রামাণিক বলেন, “আমি বিষয়টি আগে বুঝতে পারিনি। স্বামীর জ্ঞান ফিরলে ওই হাতুড়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করব। পুনরায় যাতে ওই ব্যক্তি আর কারও এ ধরনের ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Katwa Patients

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy