Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪
Risky Level Crossing

চলন্ত ট্রেনের গা ঘেঁষে মোটরবাইক, সাইকেল 

রবিবার রাতে শিয়ালদহ মেন লাইনে খড়দহ স্টেশন সংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে গাড়ির।

মেমারির কৃষ্ণবাজার রেলগেটে।

মেমারির কৃষ্ণবাজার রেলগেটে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৯:৩৮
Share: Save:

ট্রেন আসার বেশ কিছুক্ষণ আগে রেলগেট নামিয়ে দেওয়া হয়। ট্রেন দূরে থাকাকালীন তো বটেই, কাছে চলে এলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে গেটের নীচ দিয়ে পারাপার চলে মেমারির তিনটে রেলগেটেই। তার মধ্যে শহরের ভিতর কৃষ্ণবাজার রেলগেটটি বন্ধ থাকা অবস্থায় চলন্ত ট্রেনের গা-ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে সাইকেল, মোটরবাইক। কয়েক হাত দূরে ট্রেন থাকলেও হেঁটে লাইন পার হতেও দেখা যায়।

এ ভাবে ঝুঁকি নেওয়া কেন? গেটের নীচ দিয়ে মোটরবাইক পারাপার করার সময়ে একজন বলেন, “কতক্ষণ আটকে থাকব!” সাইকেল হাতে মুখ ঝামটা দিয়ে এক মহিলা বলে উঠলেন, “আপনার কী মশাই। আমি তো নিজের ইচ্ছাতেই ঝুঁকি নিচ্ছি। কিছু হলে আমার বাড়ির লোকেরা বুঝবে।” গেটম্যান বলেন, “মোটরবাইক, সাইকেল, স্কুটার নিয়ে যাতে কেউ বন্ধ গেটের নীচের দিয়ে পার না হতে পারেন, তার জন্য নতুন করে গেট বসানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ঝুঁকির পারাপার বন্ধ হচ্ছে না। নিষেধ করলে আমাদেরও কথা শুনিয়ে দেয়।” পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘মানুষ সচেতন না হলে দুর্ঘটনা এড়ানো বড় কঠিন। প্রাণের মূল্য উপলব্ধি করতে হবে। না হলে শুধু ধরপাকড়, জরিমানা করে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়।’’

রবিবার রাতে শিয়ালদহ মেন লাইনে খড়দহ স্টেশন সংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে গাড়ির। নিয়ম ভেঙে গাড়িটির চালক লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ হওয়ার সময় জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়েন। তাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। তার পরেও হুঁশ ফেরেনি বহু জায়গায়। মঙ্গলবার সকালে মেমারির লেভেল ক্রসিংয়ে অসচেতনতার বহু ছবি দেখা যায়। বর্ধমানের কালনা গেট, শক্তিগড়, মশাগ্রাম-সহ বর্ধমান-হাওড়া মেন ও কর্ড লাইনের অনেক লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ হওয়ার পরে অনেকে তুলে পারাপার করেন বলেও জানা গিয়েছে।

বছর দেড়েক আগে মেমারির ইলামপুর রেলগেট বন্ধ থাকা অবস্থায় তিন যাত্রীকে নিয়ে লাইনের উপর ফেঁসে গিয়েছিলেন এক টোটো চালক। এ দিকে ট্রেন ছুটে আসছে। সে সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন মেমারির পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী। তিনি ছুটে এসে যাত্রীদের পার করে টোটোকেও সাহায্য করেন। সে দিনের কথা তুলে পুরপ্রধান বলেন, “বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। মানুষকে সচেতন হতেই হবে। কৃষ্ণবাজারে রেলগেটে আন্ডারপাস ও জিটি রোডের উপর রেলগেটে উড়ালপুলের দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। পুরসভা থেকেও ওই দু’টি প্রস্তাব রেল কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।” বিধায়ক (মেমারি) মধুসূদন ভট্টাচার্যের দাবি, উড়ালপুল তৈরি নিয়ে বিধানসভাতেও দাবি রাখা হয়েছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণবাজারে উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংযোগকারী রাস্তার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় কৃষ্ণবাজারের প্রস্তাব সরে যায় জিটি রোডের রেলগেটে। ঠিক হয়েছে, মেমারির উড়ালপুলটি রেল সম্পূর্ণ নিজের খরচায় করবে। এমনকী জমি অধিগ্রহণের খরচও রেল বহন করবে। সেই কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে কৃষ্ণবাজার রেলগেটে নিজস্ব জায়গায় আন্ডারপাসও করতে পারে রেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Memari level Crossing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE