ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র
প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার পরেও প্রসব করাতে হবে। এমনই দাবি জানিয়েছিলেন পরিজনেরা! চিকিৎসকদের অভিযোগ, এই দাবি মানা কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলার পরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান পরিজনদের একাংশ। শনিবার রাতের ঘটনা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ হেমলতা রাউথ (১৮) নামে এক প্রসূতিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তাঁর বাড়ি, হিরাপুর থানার সাঁতাডাঙায়। ওই সময়ে বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক জয়ন্ত গঙ্গোপাধ্যায় প্রসূতির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে জানান ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু প্রসূতিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তাই চিকিৎসক দেহটি ময়না-তদন্তের নির্দেশ দেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রসূতির পরিজনেরা দেহের ময়না-তদন্ত করাতে চাননি। তাঁরা মৃতার সন্তান প্রসবের দাবি জানান। জয়ন্তবাবু তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, এটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। কারণ, মায়ের মৃত্যু হলে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। অভিযোগ, পরিজনেরা চিকিৎসকের কথা না শুনে আচমকা ওই বিভাগে ভাঙচুর শুরু করেন। আরও অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককেও মারধর করা হয়। রাত ২টো পর্যন্ত এই তাণ্ডব চলে বলে অভিযোগ। পরে খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, রাতে গোলমালের খবর পাওয়ামাত্র তিনি হাসপাতালে পৌঁছন। তাঁর দাবি, তিনিও প্রসূতির পরিজনদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। সুপার বলেন, ‘‘আক্রান্ত চিকিৎসক আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরাও হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ করব।’’
পুলিশ জানায়, রবিবার সকাল থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ। অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।
ওই ঘটনার পরে হাসপাতালের সুপার জানান, কোনও কারণ ছাড়াই এক শ্রেণির মানুষ বারবার হাসপাতালে অশান্তি করছেন। ভাঙচুর চালানো, চিকিৎসক হেনস্থার মতো ঘটনা ঘটছে। হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটেছে। ফলে রোগীর সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা হাসপাতালের পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। সুপার আরও জানান, হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের উপরে এমন হামলা রুখতে হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প তৈরির আর্জি জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy