উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের ‘সন্ত্রাস কাহিনি’ এখনও রাজ্য-রাজনীতিতে টাটকা। জমি কেড়ে নেওয়া, তোলাবাজি, নারী নির্যাতন-সহ নানা অভিযোগ উঠেছিল তাঁর এবং তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। সেই শাহজাহানেরই সন্ত্রাস, অত্যাচার, জুলুমবাজি চালানোর অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের শেখ ফিরোজ় নামে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
ফিরোজ়ের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বেরুগ্রাম অঞ্চলের চক্ষণজাদি, চককৃষ্ণপুর, শম্ভুপুর,জামুদহ-সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে তাঁদের আর্জি, ফিরোজ়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হোক।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেরুগ্রামের ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’’ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা এবং পরবর্তী কালে নানা অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। একই ভাবে কি ফিরোজ়ের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে? রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘যা শুনছি, তা যদি সত্য হয়, তা হলে দল অবশ্যই পদক্ষেপ করবে।’’
ফিরোজের বাড়ি বেড়ুগ্রাম অঞ্চলের চক্ষণজাদি গ্রামে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ফিরোজ় তৃ়ণমূলের কোনও বড় পদে নেই। তবে তাঁর স্ত্রী ২০১৮ সাল থেকে বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। গ্রামবাসী জহিদ মণ্ডল বলেন, ‘‘স্ত্রী পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার পর থেকেই গ্রামের বেতাজ বাদশা হয়ে উঠেছে ফিরোজ়। ২০২১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় ফেরার পরে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন উনি।’’ বাদল মল্লিক নামে আর এক গ্রামবাসীর দাবি, ‘‘সন্দেশখালির শাহজাহান শেখের মতো হয়ে উঠেছেন শেখ ফিরোজ়। জমি-বাড়ি দখল করছেন। ভয় দেখিয়ে সব কেড়ে নেন। ওঁর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা জরুরি।’’
ফিরোজ় অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, এ সব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ সাহাবুদ্দিন ওরফে দানির চক্রান্ত। দানির পাল্টা দাবি, ‘‘ফিরোজ়ের সব অন্যায় ও অপকর্মের কথা আমি দলের জেলা ও ব্লক সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছি।’’ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁ বলেন, “আমিই গ্রামবাসীদের পুলিশের কাছে গিয়ে ফিরোজ়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে বলে ছিলাম। গ্রামের বাসিন্দাদের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটা পুলিশই বলতে পারবে।’’