Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Chittaranjan Locomotive Works

Chittaranjan Locomotive Works: যন্ত্রাংশ কেনার বিরোধিতায় শ্রমিক-ক্ষোভ

এ দিন সকাল ১১টায় কারখানার লেবার ইউনিয়নের সদস্য হাজারেরও বেশি শ্রমিক সংস্থার প্রশাসনিক কার্যালয়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। শুক্রবার।

চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
চিত্তরঞ্জন শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৩৪
Share: Save:

বেসরকারি সংস্থার থেকে যন্ত্রাংশ কিনবে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ)। — এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় শুক্রবার প্রায় দু’ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকদের একাংশ।

এ দিন সকাল ১১টায় কারখানার লেবার ইউনিয়নের সদস্য হাজারেরও বেশি শ্রমিক সংস্থার প্রশাসনিক কার্যালয়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এক সময় তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে ঢুকে আধিকারিকদের চেম্বারের সামনে বসেও পড়েন। কোনও ভাবেই কারখানার ‘ট্র্যাকশন মোটর বিভাগে’র যন্ত্রাংশ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কেনা যাবে না, এমন দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। পাশাপাশি, ওই সব যন্ত্রাংশ কারখানাতেই তৈরি করার দাবি জানানো হয়।

লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত বলেন, “ট্র্যাকশন মোটর বিভাগের যন্ত্রাংশগুলি আগে এই কারখানাতেই তৈরি করা হত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কারখানায় তৈরি না করে বহু যন্ত্রাংশ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কেনা হচ্ছে। এক ফলে, কারখানায় কর্মী-সঙ্কোচন করা হচ্ছে। এ ভাবে ভবিষ্যতে বিভাগটিকেই বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।”

বিক্ষোভের জেরে প্রশাসনিক ভবনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। আরপিএফ ও আধিকারিকেরা বিক্ষোভ তোলার অনুরোধ করলেও লাভ হয়নি। বিক্ষোভকারীরা জানান, ট্র্যাকশন মোটর বিভাগের যন্ত্রাংশ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কেনার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে, বিক্ষোভ তোলা হবে না। এই পরিস্থিতিতে দুপুর ২টো নাগাদ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কারখানার সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধান তথা প্রিন্সিপাল চিফ ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার রবীন্দ্রপ্রসাদ মিশ্র বৈঠক করেন। তাঁর কাছ থেকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে
নেন শ্রমিকেরা।

সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল ইঞ্জিনের প্রধান যন্ত্রাংশই হল এই ট্র্যাকশন মোটর। এই মোটর তৈরির জন্য অতি প্রয়োজনীয় কিছু যন্ত্রাংশ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ, ওই যন্ত্রাংশগুলি তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ইঞ্জিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে যন্ত্রাংশ কেনার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ২৯০টি ইঞ্জিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। একটি ইঞ্জিনে ছ’টি ট্র্যাকশন মোটর লাগাতে হয়। সেই হিসাব মতো প্রায় ১,৭০০টি ট্র্যাকশন মোটর দরকার। কিন্তু কাঁচামালের অভাবে সংস্থায় ট্র্যাকশন মোটর তৈরিতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় কিছু যন্ত্রাংশ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে বলে দাবি সংস্থার কর্তৃপক্ষের। যদিও কারখানা কর্তৃপক্ষের এই যুক্তি মানতে চায়নি লেবার ইউনিয়ন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজীবের দাবি, “কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত ভাবেই কাঁচামালের আমদানি করছেন না। কারণ, বেসরকারি সংস্থা কাঁচামাল পেলেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা তা পাচ্ছে না, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ ভাবে কারখানার বেসরকারিকরণের চক্রান্ত করা হচ্ছে।” কারখানার ডিজিএম অলোক কুমার বলেন, “শ্রমিক সংগঠনের তোলা অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। উৎপাদনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-নীতি মানতে হয়। এর থেকে বেশি কিছু বলব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chittaranjan Locomotive Works
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE