E-Paper

আসল খুনি তাহলে কারা, প্রশ্ন ডালিম শেখের পরিবারের

সাত বছর বিচার চলার পরেও খুন করল কে, তা সামনে না আসায় হতাশ ডালিম শেখের পরিবার। তাঁদের আক্ষেপ, ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা মতো এফআইআর করা হয়েছিল।

প্রণব দেবনাথ

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩০
tmc

—প্রতীকী ছবি।

মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা সানাউল্লা ওরফে ডালিম শেখ খুনের ঘটনায় সাত বছর বিচার চলার পরে বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্তেরা। খুনের ঘটনায় সিআইডি উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিতে না পারায় কাটোয়া আদালতের বিচারক মধুছন্দা বসু সংশোধনাগারে থাকা ২৫ জন অভিযুক্তকেই নিঃশর্ত মুক্তি দিয়েছেন। ডালিমের পরিবার, মঙ্গলকোটের তৃণমূল কর্মীদের একাংশের তরফে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে ওই খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীরা কি এখনও আড়ালেই রয়েছেন।

সাত বছর বিচার চলার পরেও খুন করল কে, তা সামনে না আসায় হতাশ ডালিম শেখের পরিবার। তাঁদের আক্ষেপ, ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা মতো এফআইআর করা হয়েছিল। সিআইডি তদন্ত করে চার্জশিট দেয়। দুই অভিযুক্ত ছাড়া প্রত্যেকে গ্রেফতার হলেও এতদিন পরে সবাই বেকসুর খালাস হয়ে গেল। তাঁদের দাবি, ‘‘সিআইডির তদন্তে আস্থা ছিল। কিন্তু, কাটোয়া আদালতের রায়ে আমরা হতাশ।’’ বিচারের দাবিতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। এ দিনই ওই খুনের ঘটনায় মুক্তি পাওয়া বাবর আলি শেখ শিমুলিয়া গ্রামে নিজের বাড়িতে ঢোকেন। তা নিয়েও গ্রামে চর্চা চলে দিনভর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিগন গ্রামের কয়েক জন তৃণমূল কর্মীর দাবি, ডালিম খুনের পরে ২০২১ সালে ২৬ জানুয়ারি নিগনের বুথ সভাপতি সঞ্জিত ঘোষকে দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে খুন করে। ওই বছরই ১২ জুলাই লাখুরিয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অসীম দাস খুন হয়। ওই খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্ত করে চার্জশিট জমা দিয়েছে। বর্তমানে বিচার চলছে। কিন্তু ডালিম খুনের মামলায় অভিযুক্তদের খালাস পাওয়া তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, দাবি তাঁদের।

পুলিশ ও রাজনৈতিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডালিম শেখ শিমুলিয়া ১ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। তৎকালীন মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি তথা বর্তমান বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত ছিলেন। অন্য গোষ্ঠীতে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ও জেলা পরিষদের তৎকালীন উপাধ্যক্ষ বিকাশনারায়ণ চৌধুরী। এলাকার ক্ষমতা দখল নিয়ে প্রায়ই দু’পক্ষের বিবাদ সামনে আসত। ২০১৭ সালের ১৯ জুন সন্ধ্যায় কাটোয়া-বর্ধামান রোডের পাশে নিগনচটিতে একটি মাছের আড়তে বসে থাকাকালীন গুলিতে খুন হন ডালিম।

ডালিমের ভাই, অভিযোগকারী আসাদুল্লা শেখ বলেন, “আমার দাদা অপূর্ব চৌধুরীর সঙ্গে থাকত বলে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর রাগ ছিল। ঘটনার আগের দিন মন্ত্রীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী ও বিকাশনারায়ণ চৌধুরী একটি গোপন মিটিং করে। ওঁরাই ষড়ষন্ত্র করে আমার দাদাকে খুন করেছে। আমি সেই মতো এফআইআর করেছিলাম। খুনের পরে আমাদের বাড়িতে এসে তৃণমূল নেতা মুকুল রায় থেকে শুরু করে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, অনুব্রত মণ্ডলেরা এসে খুনিরা পার পাবে না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর ভাই রহমতুল্লা ছাড়া প্রত্যেকেই গ্রেফতার হয়। সাত বছর জেলে থেকে বিচার চলার পরে ওরা সবাই বেকসুর খালাস হয়ে গেল। তাহলে খুনের বিচার পেলাম কই!” অভিযুক্তরা জেলে থেকেও প্রভাব খাটিয়ে খালাস হয়েছেন কি না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘সিআইডি তদন্ত করেছে। বিচারক রায় দিয়েছেন। এই বিষয়ে আর কোনও মন্তব্য করব না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mangalkot TMC Death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy