Advertisement
E-Paper

অমানবিকতায় ক্ষুব্ধ নাগরিকেরা

আসানসোল আদালতের সরকার পক্ষের প্রধান আইনজীবী স্বরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনা খুব লজ্জার। গণপ্রহার রোধে সরকার আইন করেছে। এ বার দোষীদের বিরুদ্ধে এই আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার।’’

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
দেন্দুয়া রেলগেট লাগোয়া এলাকায় ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

দেন্দুয়া রেলগেট লাগোয়া এলাকায় ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

গুজবের জের তো রয়েছেই, তার সঙ্গে মানবিকতার অভাবও আছে, বারবার গণপিটুনির ঘটনার কারণ হিসাবে এমনটাই মনে করছেন অনেক নাগরিক। বুধবার সকালে সালানপুরের দেন্দুয়া রেলগেট লাগোয়া এলাকায় গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পরে নানা এলাকায় সচেতনতা প্রচারে জোর দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

এই ঘটনার পরেই পুলিশের তরফে গুজবে কান না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। রানিগঞ্জ, নিয়ামতপুর-সহ নানা জায়গায় মাইকে প্রচার করে পুলিশের তরফে বাসিন্দাদের আইন হাতে না তুলে নেওয়ার আবেদন করা হয়। এ দিন যেখানে ঘটনাটি ঘটে, তার অদূরেই বাড়ি শম্ভু রায়ের। তাঁর দাবি, সকালে হইচই শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন, এক দল লোক উন্মত্ত ভাবে এক ব্যক্তিকে মারধর করছে। সামনে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য বেশিক্ষণ দেখতে পারেননি তিনি। পরে পুলিশকে নিথর দেহ তুলে নিয়ে যেতে দেখেন। শম্ভুবাবু বলেন, ‘‘ভয়ে বাধা দিতে পারিনি। খুব আফশোস হচ্ছে।’’

আসানসোল আদালতের সরকার পক্ষের প্রধান আইনজীবী স্বরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনা খুব লজ্জার। গণপ্রহার রোধে সরকার আইন করেছে। এ বার দোষীদের বিরুদ্ধে এই আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার।’’ তিনি জানান, সমাজের বিশিষ্ট মানুষজনকে নিয়ে প্রশাসনের তরফে সচেতনতা প্রচার করা উচিত। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্যের মতে, ‘‘গুজব ছড়ানোর পাশাপাশি কিছু মানুষ খুব অমানবিক ও অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছেন।’’ তিনি জানান, বুধবার থেকেই স্কুলের শিক্ষিকারা প্রত্যেক শ্রেণিতে ছাত্রীদের এ বিষয়ে সচেতন করা শুরু করেছেন। পড়ুয়ারা যাতে প্রতিবেশীদের সচেতন করে, সেই আবেদনও করা হয়েছে।

আসানসোলের চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত মনে করেন, গুজব বিষয়টি সাধারণত অশিক্ষার জেরে তৈরি হয়। তাই পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলিতে সমাজের সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দিয়ে বেশি করে সচেতনতা প্রচার করলে ফল মিলবে বলে তাঁর আশা। তাঁর আরও আর্জি, পুজো মণ্ডপগুলিতে এক সঙ্গে বহু মানুষের ভিড় জমে। প্রশাসনের তরফে পুজোর উদ্যোক্তাদের গুজব রোখার প্রচারের আবেদন করা হোক।

পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ বলেন, ‘‘মানুষকে আরও মানবিক হতে হবে। সন্দেহজনক কিছু দেখলে পুলিশকে জানান। কিন্তু কাউকে মারধর করা বেআইনি।’’ তিনি জানান, পুলিশ ইতিমধ্যে গুজব বন্ধে প্রচার শুরু করেছে। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম রায় বলেন, ‘‘অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা। জেলা প্রশাসনের তরফে সচেতনতা প্রচারে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

Salanpur Lynching
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy