E-Paper

দুর্গাপুজোয় বাড়ল ব্যবসা, খুশি জেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

পুজোর এই লক্ষ্মীলাভের সুফল যে জেলাতেও পৌঁছেছে, তা বোঝা গেল নানা প্রান্তের ছোট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে। দুর্গাপুরের ডিপিএল কলোনিতে অস্থায়ী খাবারের দোকান দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব বল।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:১৭
দুর্গাপুরের ডুমুরতলা সর্বজনীন পুজো মণ্ডপের সামনে।

দুর্গাপুরের ডুমুরতলা সর্বজনীন পুজো মণ্ডপের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে রাজ্যের অর্থনৈতিক লেনদেনের হিসাব যে নজরকাড়া থাকে, তা গত কয়েক বছর ধরেই উঠে আসছে বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের তথ্যে। এই মরসুমে বিশেষ ভাবে উপকৃত হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এ বারের পুজোয় লক্ষ্মীলাভ গত কয়েকটি বারের তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি হয়েছে।

অতিমারির আগে ব্রিটিশ কাউন্সিল পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুজো নিয়ে সমীক্ষা করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ২০১৯-এ উৎসব ঘিরে ৩২,৩৭৭ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। ২০২২-এ পুজো ঘিরে ৪৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছিল। এ বার একটি সূত্রে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, ব্যবসা ৬০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে।

পুজোর এই লক্ষ্মীলাভের সুফল যে জেলাতেও পৌঁছেছে, তা বোঝা গেল নানা প্রান্তের ছোট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে। দুর্গাপুরের ডিপিএল কলোনিতে অস্থায়ী খাবারের দোকান দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব বল। তিনি জানাচ্ছেন, গত দশ বছর ধরেই এমন স্টল দিচ্ছেন। গত বার বৃষ্টির কারণে বিক্রি মার খেয়েছিল। এ বার তা না হওয়ায় বিক্রি ভাল হয়েছে। নবমী ও দশমীর রাতেই শুধু বিক্রি হয়েছে প্রায় কুড়ি হাজার টাকার মতো। পুজোর বিক্রি নিয়ে উচ্ছ্বসিত পানাগড়ের ফুচকা বিক্রেতা প্রকাশ সিংহও। তিনি জানান, গত বার দু’হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়েছিল পুজোর এক-একটি রাতে। এ বার চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে। তাঁর কথায়, “সপ্তমীর রাত থেকে চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল। এক-এক রাতে পাঁচ হাজারেরও বেশি ফুচকা বিক্রি হয়েছে। পুজোর চার দিন রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত ফুচকা বিক্রি করতে হয়েছে। একা সামাল দিতে না পারায়, আরও দু’জনকে রাখতে হয়েছিল।” একই কথা জানাচ্ছেন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের বেলুন বিক্রেতা সন্দীপ মণ্ডল। তিনি জানান, এ বার ভিড় গত বারের পুজোর তুলনায় বেশি ছিল। পুজোর চার দিন প্রতি রাতে প্রায় দু’হাজার টাকার বেলুন
বিক্রি হয়েছিল।

বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছে বণিক সংগঠনগুলিও। পানাগড় চেম্বার অব কমার্সের মুখ্য উপদেষ্টা রতন আগরওয়ালের কথায়, “আমাদের রাজ্যে প্রতিটি ব্যবসায়ী দুর্গাপুজোর দিকেই তাকিয়ে থাকেন। আর পুজোর চার দিন বিভিন্ন মণ্ডপে অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসেন অনেকে। এই বছর সেই সব দোকানে বিক্রি ভাল হয়েছে। প্রকৃতিও সঙ্গ দিয়েছে।”

অর্থনীতির শিক্ষকদের একাংশের মতে, যে কোনও বড় উৎসবের সময় সাধারণ মানুষের টাকা খরচ করার প্রবণতা বাড়ে। অর্থনীতিতে টাকার এই সঞ্চালনের জন্য ছোট-বড়, সব ব্যবসাতেই গতি আসে। দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক অঞ্জন রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, যে কোনও উৎসবে জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়ে। এর ফলে কর্মসংস্থান ও মানুষের আয়ও বাড়ে। তাঁর কথায়, “বিশেষ করে যাঁরা প্রান্তিক মানুষ ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন, যেমন, মূর্তিশিল্পী, অস্থায়ী প্যান্ডেল বানান যাঁরা, পুজো সংক্রান্ত জিনিসপত্র তৈরি করেন যাঁরা, তাঁদেরও আয় বাড়ে।” তাঁর মতে, এই চাহিদা বৃদ্ধির ফল সুদূর প্রসারী।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kanksa

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy