Advertisement
E-Paper

বিধায়কের টেট নিয়ে মন্তব্যে অস্বস্তি দু’দলেই

অনেকেই দাবি করেন, বিধায়ক নিজের মুখে পরিবারের লোকজন-সহ তৃণমূল কর্মীদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০১৪ সালের টেট দুর্নীতিকে মান্যতা দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

টেট-বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। দল ছেড়ে সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বিরুদ্ধে টেট কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে দু’দিন আগে কালনার সভায় সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। বৃহস্পতিবার পাল্টা পূর্ব বর্ধমানের কয়েকজন নেতার পাশাপাশি, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে টেট মারফত নিয়োগে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন বিধায়ক। ওই মন্তব্যেই কার্যত নিজের স্ত্রী, বৌদি এবং তৃণমূল কর্মীদের চাকরি দেওয়ার কথাও মেনে নেন তিনি। সবমিলিয়ে বিধায়কের মন্তব্যে অস্বস্তিতে শাসক, বিরোধী দু’পক্ষই।

বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ ছিল, ‘‘তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ, তপন চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের মত অনেক নেতাই চাকরি দিয়েছেন। আমার স্ত্রী, বৌদি চাকরি পেয়েছেন ঠিকই। এ ছাড়া আমি যে ৬২ জনকে চাকরি দিয়েছি, তাঁরা সবাই তৃণমূলের কর্মী।’’ শুক্রবার দিনভর কালনার হাটে-বাজারে, চায়ের দোকানে বিধায়কের মন্তব্য নিয়ে আলোচনা চলে। অনেকেই দাবি করেন, বিধায়ক নিজের মুখে পরিবারের লোকজন-সহ তৃণমূল কর্মীদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০১৪ সালের টেট দুর্নীতিকে মান্যতা দিয়েছেন। কালনার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা এ দিন বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের মন্তব্য না করায় ভাল। মন্তব্য করলে ফের পাল্টা বিরোধী শিবির কথা বলবে। তাতে জটিলতা আরও বাড়বে।’’ বিজেপি নেতাদের অনেকেরও দাবি, বিধায়ক নিজের স্ত্রী, আত্মীয়ের চাকরি দেওয়ার কথা স্বীকার করে দলকে বিপাকে ফেলে দিয়েছেন। দলের কর্মীদের একাংশের দাবি, এমনিতেই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে আছে এমন নেতাকে দলে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন ছিল। এ বার তা মাথা চাড়া দেবে আরও।

তৃণমূলে থাকাকালীন বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন কালনা পুরসভার বর্তমান প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ। এ দিন তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘দল কখনও বলে না নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করে চাকরি দিতে। ২০১৪ সালে বিশ্বজিৎ কুণ্ডু তাঁর পরিবার-সহ বিভিন্ন লোকজনেদের চাকরি দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা মিছিল করেছিলাম। তখন আমি অন্য দলে থাকলেও তৃণমূল আমাকে সমর্থন করেছিল বলেই আমি ওঁর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে প্রতিবাদ করতে পেরেছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিধায়কের পরিবারের অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু ওঁর মাধ্যমে দলের কোনও লোক চাকরি পাননি।’’ পরিবারের বাইরের লোকেদের থেকে চাকরির বিনিময়ে কয়েক লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল বলেও তাঁর অভিযোগ। বিশ্বজিৎবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘চাকরির বিনিময়ে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি।’’

এ দিন বিধায়ক বলেন, ‘‘সব পাখি মাছ খায়, দোষ হয় মাছরাঙার।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘অনেক নেতার আত্মীয় সুযোগ পেয়েছে, অথচ টেট কেলেঙ্কারির দায় আমার উপরে চাপিয়ে দেওয়া হল। আমার বৌ, বৌদিকে চাকরি দেওয়া যদি অন্যায় হয়, তাহলে অন্যদের ক্ষেত্রে অন্যায় নয় কেন! ২০১৪ সাল থেকে বিষয়টি নিয়ে কষ্ট পাচ্ছি।’’ দেবপ্রসাদবাবুর অভিযোগ নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘আদালত এবং নিরপেক্ষ কোনও সংস্থা তদন্ত করলে কাদের চাকরি দিয়েছি, সেই তালিকা দিয়ে দেব। তবে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি।’’

BJP TMC TET
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy