Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
cracker

মজুত বাজি নিয়েই চিন্তা

এই পরিস্থিতিতে বাজি বিক্রি বন্ধ করতে ঘুম ছুটছে পুলিশে। পুলিশের একাংশের দাবি, গ্রামগঞ্জে অনেক বাড়িতেই বাজি মজুত করে রাখা হয়েছে।

বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজারে এক দোকানে তখনও বাজি মজুত। নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজারে এক দোকানে তখনও বাজি মজুত। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০২:৩৯
Share: Save:

করোনা-আক্রান্তদের পক্ষে বাজির ধোঁয়া মারাত্মক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সে কারণে আদালতের নির্দেশ সঙ্গে যে কোনও ভাবে হাসপাতাল-সংলগ্ন এলাকা বাজিমুক্ত রাখতে থানাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। আজ, শনিবার ও কাল, রবিবার, কালীপুজো ও দীপাবলির দিন হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা যাতে পুরোপুরি বাজিমুক্ত থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত নজরদারিও চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তবে আগে থেকে মজুত করা বাজি নিয়ে চিন্তা থাকছে, মানছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।

আদালতের নির্দেশে এ বার আতসবাজি বা শব্দবাজি বিক্রি এবং পোড়ানো নিষিদ্ধ। পুজো মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনের ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে আদালত। এই পরিস্থিতিতে বাজি বিক্রি বন্ধ করতে ঘুম ছুটছে পুলিশে। পুলিশের একাংশের দাবি, গ্রামগঞ্জে অনেক বাড়িতেই বাজি মজুত করে রাখা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন বাড়িতেও গত কয়েকদিন ধরে বাজি মজুত করা হয়েছে। গত বছরের অতিরিক্ত বাজিও রয়ে গিয়েছে অনেক বাড়িতে। এই মজুত বাজি নিয়েই চিন্তায় রয়েছে জেলা পুলিশ। কয়েকদিন আগে, বর্ধমান শহরে আলমগঞ্জ রোডে একটি পুজোকে ঘিরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজি ফাটার আওয়াজ মিলেছে। ভাসানের সময়েও দামোদর পাড় থেকে বাজির শব্দ ও আলো ভেসে এসেছে। হাইকোর্টের রায়ের পরেই এ দৃশ্য দেখেছেন বর্ধমান শহরের বাসিন্দারা। শহরের সচেতন বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ‘‘একটি পুজোকে ঘিরে যে ভাবে বাজির শব্দ পাওয়া গিয়েছে, তাতেই অনেকে শিউরে উঠেছেন। বিভিন্ন বাড়িতে মজুত থাকা বাজির একাংশ ফাটলেই দূষণে শহর ঢেকে যাবে।’’ জেলার নানা জায়গায় বেশ কিছু স্টেশনারি, মুদি দোকান থেকেও গত কয়েকদিনে বহু বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জেলা পুলিশের দাবি, এক দিকে বাজির বিরুদ্ধে নভেম্বর মাস ধরে অভিযান চলছে। অন্য দিকে, হাইকোর্টের রায় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করা হচ্ছে। শহরের বিশিষ্টজন থেকে পুজো উদ্যোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করেও সচেতন করা হয়েছে। বিশিষ্টজনদের পরিচিত-পরিজনদের মধ্যে প্রচারও করতে বলা হয়েছে। এর ফলে, অনেকে বাজি ফাটানো থেকে দূরে থাকবেন বলেই পুলিশের অনুমান। আবার ক্লাবের সদস্যেরাও প্রচার করলে লাভ হবে মনে করছে পুলিশ।

জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম: ০৩৪২-২৬৪৭৪৯২

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ মাসে বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২০টি মামলা দায়ের হয়েছে জেলায়। ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তার মধ্যে ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, প্রায় ১৭ কুইন্টাল বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া, ২,৩৮২টি বাজির প্যাকেট ও ১১,২২৫টি বাজি পুলিশ নষ্ট করে দিয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘প্রতিটি জায়গায় হাইকোর্টের রায় নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। কোনও ভাবেই বাজি ফাটানো বা পোড়ানো যাবে না। নিষেধ না শুনলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কালনায় বাজি বন্ধ করতে আলাদা দল গড়েছে পুলিশ। গ্রাম-শহর জুড়ে চলছে তল্লাশি। পুলিশের দাবি, আনুখাল, পিণ্ডিরা এবং সুলতানপুর এলাকায় বাজি তৈরির চল রয়েছে। সেখানে বাড়তি নজরদারি রয়েছে। কেউ গোপনে বাড়িতে বাজি তৈরি করছেন কি না তা জানতে এই এলাকাগুলিতে ভিলেজ পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা নজর রাখছেন। মহকুমা পুলিশের এক কর্তা জানান, কালনা শহরে বেশ কিছু দোকানদার বাজি বিক্রি করতেন। তবে হাইকোর্টের নির্দেশের পরে, দোকানগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাটোয়া শহরেও প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হতে দেখা যায়নি। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ আসার আগে অনেকে বাজি মজুত করেছিলেন, সেগুলি লুকিয়ে বিক্রি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, নজরদারি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja Crackers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE