Advertisement
E-Paper

খেতে কাজ করেই ৯০ শতাংশ

বাবা ভাগচাষি। খেতের কাজে বাবার সঙ্গে হাত লাগাতে হয় তাকেও। কিন্তু পড়াশোনায় তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বাড়িতে অভাব-অনটনের মাঝেই ৪৫০ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে জামদহ হাইস্কুলের ছাত্র সুমন ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০১:৩৭
বাঁ দিক থেকে, সুমন, অনিরুদ্ধ, সৌম্যদীপ ও সুরভি। নিজস্ব চিত্র।

বাঁ দিক থেকে, সুমন, অনিরুদ্ধ, সৌম্যদীপ ও সুরভি। নিজস্ব চিত্র।

বাবা ভাগচাষি। খেতের কাজে বাবার সঙ্গে হাত লাগাতে হয় তাকেও। কিন্তু পড়াশোনায় তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বাড়িতে অভাব-অনটনের মাঝেই ৪৫০ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে জামদহ হাইস্কুলের ছাত্র সুমন ঘোষ। শুধু সুমন নয়, এমন নানা প্রতিকূলতা টপকে ভাল ফল করেছে দুর্গাপুরেরই সুরভি ঘোষ, অনিরুদ্ধ দাস, সৌম্যদীপ ঘটকেরা।

সুমনেরা দুই ভাই-বোন। বাবা দিলীপবাবু চাষাবাদ করে সংসার চালান। ধান রোয়া থেকে ধান কাটা, সবেতেই বাবাকে সাহায্য করতে হয় সুমনকে। তার মাঝেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে সে। তাই সে ৯০ শতাংশ নম্বর পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তবে কপালে ভাঁজ দিলীপবাবুর। এর পরে ছেলের পড়াশোনা চালানো নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কিছু একটা ব্যবস্থা তো করতে হবে।’’

দুর্গাপুর মহকুমায় কলা বিভাগে সম্ভাব্য প্রথম সুরভি। নতুনডাঙা হাইস্কুল থেকে ৪৭৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। বাবা সাধন ঘোষ হাটে সবজি বিক্রি করেন। তিন মেয়ের মধ্যে ছোট সুরভি বরাবরই পড়াশোনায় ভাল। সংসারে নানা সমস্যা সত্ত্বেও সুরভির পড়াশোনা বন্ধ হতে দেননি সাধনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে ভূগোল নিয়ে পড়তে চায়। অনেক খরচ। জনি না কি করে কি করব।’’ সুরভি শিক্ষিকা হতে চায়। তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ চট্টরাজ বললেন, ‘‘আমরা ওর পাশে আছি।’’

বেনাচিতি হাইস্কুলের ছাত্র অনিরুদ্ধ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়ে ৪১৬ পেয়েছে সে। বাবা মারা গিয়েছেন বছর দেড়েক আগে। মা অসুস্থ। বোন নবম শ্রেণিতে পড়ে। ভাইবোনকেই রান্না, বাড়ির কাজ, মায়ের দেখাশোনা করতে হয়। এত দিন স্কুল ও আত্মীয়-পরিজনদের সাহায্যে পড়াশোনা চালালেও এর পরে আর রাস্তা দেখছে না অনিরুদ্ধ। তার কথায়, ‘‘এত দিন স্কুলের স্যারেরা, দাদুরা আমাকে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন। দেখি এ বার কী হয়। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতেই হবে।’’ গোপালমাঠ হাইস্কুলের ছাত্র সৌম্যদীপ ঘটক বিজ্ঞান বিভাগে পেয়েছে ৪৪৬ নম্বর। তার বাবা ঠিকা শ্রমিক। মাসে আয় হাজার চারেক টাকা। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে অনিরুদ্ধ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। তার বাবা শঙ্করপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘ছেলে পড়তে চায়। কী হবে জানি না!’’

HS Result Exam Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy