Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ketugram

ভিডিয়ো তুলে শিক্ষকের ‘কুকর্ম’ ফাঁস নাবালকের

পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে গঙ্গাটিকুরির ধর্মরাজতলার বাড়ি থেকে সন্দীপ মণ্ডল নামে বছর আঠাশের ওই গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০২:৪১
Share: Save:

বাড়িতে পড়াতে এসে গৃহশিক্ষক ‘যৌন নির্যাতন’ করেন, অভিভাবকদের বলার চেষ্টা করেছিল বছর দশেকের ছেলেটি। কিন্তু বুঝিয়ে উঠতে পারেনি। শেষে নিজেই ফন্দি আঁটে সে। আগে থেকে ফোনের ক্যামেরা চালু রেখে ওই নাবালক ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করার পরে, অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে ওই গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরিতে নাবালকের এমন বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেছেন প্রতিবেশী থেকে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে গঙ্গাটিকুরির ধর্মরাজতলার বাড়ি থেকে সন্দীপ মণ্ডল নামে বছর আঠাশের ওই গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, মাসখানেক ধরে তিনি ওই ছাত্রের উপরে যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। সোমবার ধৃতকে কাটোয়ার ‘পকসো’ সংক্রান্ত আদালতে তোলা হলে আজ, মঙ্গলবার ফের ওই আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে ওই নাবালক। তার বাবা জানান, মাস ছ’য়েক ধরে পাড়ারই যুবক সন্দীপ ছেলেকে বাড়িতে এসে পড়াতেন। কিন্তু কয়েকদিন ধরে ছেলে তাঁর কাছে পড়তে চাইছিল না। কারণ জিজ্ঞেস করলে ঠিকঠাক কিছু বলতও না। তাঁরা তাকে পড়ায় মন দিতে বলেন। দিন তিনেক আগে ছেলে মাকে জানায়, গৃহশিক্ষক তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন। কিন্তু মা বিশ্বাস করতে চাননি। ছেলেটির বাবার কথায়, ‘‘এর পরেই শনিবার দুপুরে আমার ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে মোবাইল নিয়ে নেয় ছেলে। যে বিছানায় ও পড়তে বসে, তার সোজাসুজি একটি তাকে ফোনটি রেখে ক্যামেরা চালু করে রেকর্ডিং ‘অন’ করে দেয়। শিক্ষক চলে যাওয়ার পরে সেই ভিডিয়ো আমাদের দেখায়।’’

ছাত্রের বাবার দাবি, ছেলে মোবাইল ব্যবহারে পটু। রেকর্ডিংয়ের সময়ে যাতে ফোন না আসে, সে জন্য মোবাইলটি ‘ফ্লাইট মোড’-এ রেখেছিল সে। রবিবার কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন তিনি। পুলিশের দাবি, ঘণ্টাখানেকের ভিডিয়োটিতে মিনিট কুড়ি ধরে নির্যাতন হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। ভিডিয়োটি (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে।

গোটা ঘটনায় তাঁরা অবাক বলে জানান পড়শিরা। তবে এলাকারই বাসিন্দা তরুণ দাস দাবি করেন, ‘‘আমার স্কুলপড়ুয়া ছেলেও ওই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত। ছেলে বলত, ওই শিক্ষক খুব মারধর করেন। সে কারণে আমরা বছরখানেক আগে তাঁর কাছে পড়ানো বন্ধ করে দিই।’’ অভিযুক্তের মা নমিতা মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘আমার ছেলে এ রকম কিছু করতে পারে, ভাবতে পারছি না!’’

‘চাইল্ড লাইন’-এর কাটোয়া মহকুমার প্রতিনিধি অরূপ সাহা বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। ওই নাবালক যে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা এই ধরনের সমস্যা নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে উদ্যোগী হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ketugram Sexual Harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE