Advertisement
E-Paper

হাল ছাড়ছি না, বলছে অমিয়রা

হিরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বার ৬৫৬ পেয়েছে অমিয় কর্মকার। ফল প্রকাশের পরে বন্ধু, পড়শি থেকে শিক্ষক, সকলেরই অভিনন্দন মিলছে। কিন্তু কী ভাবে এগোবে পড়াশোনা, সেটাই এখন চিন্তা কর্মকার পরিবারের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০২:০৪
বাঁ দিক থেকে, অমিয় কর্মকার, অংশুমান পাল ও শুভম আশ। নিজস্ব চিত্র

বাঁ দিক থেকে, অমিয় কর্মকার, অংশুমান পাল ও শুভম আশ। নিজস্ব চিত্র

কারও বাবা জিনিসপত্র ফেরি করেন। কারও মা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের রাঁধুনির কাজ করেন। কিন্তু তা বলে তাঁদের ছেলেমেয়েদের সাফল্য আটকায়নি। পশ্চিম বর্ধমানের এমন তিন জন পড়ুয়া অর্থনৈতিক নানা বাধা সত্ত্বেও এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল করেছে।

হিরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বার ৬৫৬ পেয়েছে অমিয় কর্মকার। ফল প্রকাশের পরে বন্ধু, পড়শি থেকে শিক্ষক, সকলেরই অভিনন্দন মিলছে। কিন্তু কী ভাবে এগোবে পড়াশোনা, সেটাই এখন চিন্তা কর্মকার পরিবারের। অমিয়র বাবা নিমাইবাবু জিনিসপত্র ফেরি করেন। বাবার দিকে তাকিয়েই বার্নপুরের আমবাগান এলাকার ছোট্ট এক কামরার ভাড়া ঘরে বসে কথা বলছিল অমিয়। তার কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হতে চাই। তার জন্য প্রচণ্ড পরিশ্রম করব। কিন্তু পড়ার খরচ জানি না, কী ভাবে আসবে। তবে হাল ছাড়ছি না।’’

নিমাইবাবু জানান, ছেলের রেজাল্ট বেরোবে বলে আজ ফেরি করতে যাননি। তিনি জানান, বইপত্র কিনে দেওয়া হোক বা টিউশন দেওয়া, ছেলেকে কোনও সুযোগই দিতে পারেননি। তবে এগিয়ে এসেছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় দে’র শপথ, ‘‘মাধ্যমিকের মতোই উচ্চ মাধ্যমিকেও ওর পড়ার সব খরচ দেবে স্কুল।’’

বাড়ির অবস্থা একই রকম পাঁচগাছিয়া মনোহরবহাল বিবেকানন্দ বিদ্যায়তনের ছাত্র অংশুমান পালেরও। তার প্রাপ্ত নম্বর, ৬৪১। বাড়িতে অসুস্থ ভাই আর বাবা-মা রয়েছেন। বাবা শিবপ্রসাদবাবু বারাবনিতে একটি বেসরকারি সংস্থায় দৈনিক ১৮০ টাকা হাজিরায় কাজ করেন তিনি, জানা যায় পরিবার সূত্রে। ছেলের সাফল্যে খুশি নুনির বাসিন্দা শিবপ্রসাদবাবুর গলাতেও আশঙ্কা, ‘‘ইন্টারনেট থেকে ছেলের ফল জানবো, সেই টাকাও ছিল না আজ। একটাই আর্জি, ছেলের পড়াশোনা যাতে না থামে।’’ ছাত্রের অবস্থার কথা জানেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর আশ্বাস, ‘‘শিক্ষকেরা সব দায়িত্ব নেবেন।’’

দুর্গাপুরের বিজড়ার শুভম আশ, বিজড়া হাইস্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে পেয়েছে ৫৭২। পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে ভবিষ্যতে পড়়তে চায় সে। তবে এ ক্ষেত্রেও বাধ সেধেছে পরিবারের অবস্থা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শুভমের বাবা দয়াময়বাবু পেশায় দিনমজুর। মা, সোনালীদেবী একটি শিশুশিক্ষাকেন্দ্রের রাঁধুনি। ভাল ফল করে খুশি হলেও শুভমের আশঙ্কা, ‘‘বাবা, মা দু’জনেই খুব পরিশ্রম করে আমাকে ও ভাইকে মানুষ করছেন। কিন্তু এ বার কী হবে জানি না।’’ শুভমের সাফল্যকে অভিনন্দন জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী নিজামউদ্দিনও।

সেই সঙ্গে প্রতিটি পরিবার ও পড়ুয়াদের আর্জি, পড়়াশোনা চালানোর যেন কেউ পাশে দাঁড়ায়।

Madhyamik result 2018 WBBSE মাধ্যমিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy