হাসপাতালে শিশুমৃত্যু ঘটেছে, অথচ সুপার ব্যস্ত অনুষ্ঠানে। এমনই নানা বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন এক ব্যক্তি। ওই পোস্টের মাধ্যমে হাসপাতালের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়া ও কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগ করলেন কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই। যদিও যাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ওই পোস্ট করা হয়, সেই চম্পক হাওলাদারের দাবি, তিনি নিজে তা করেননি। চম্পকবাবু এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ জানায়, ১৫ অগস্ট হাসপাতাল চত্বরে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের শেষে, দুপুর দু’টো ২৪ মিনিটে চম্পকবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে ওই পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা হয়, সুপার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত। ওঁর গাফিলতির জেরেই ‘এ দিন একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক না থাকা, মাস চারেক আগে আরও একটি শিশুমৃত্যু, পরিষেবা বেহাল হওয়ায় একাধিক রোগী মৃত্যু-সহ নানা বিষয়ে অভিযোগ করা হয় ওই পোস্টে। প্রশ্ন তোলা হয় কৃষ্ণচন্দ্রবাবুর ‘পদোন্নতি’ নিয়েও। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি, ‘সাধারণ মানুষ স্টেপ নেবে’-সহ নানা বিষয় লেখা হয় ওই পোস্টে। পুলিশ জানায়, ওই পোস্টের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক শিশুকে আদর করছেন এবং তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু— এ রকম একটি ছবিও দেওয়া হয়।
এই সেই পোস্ট। নিজস্ব চিত্র
পোস্টের খবর চাউর হতেই বুধবার কৃষ্ণচন্দ্রবাবু কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি নজরে আনেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া, এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায়, বিধায়ক ও কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগেরও। বৃহস্পতিবার সুপার বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভুল তথ্য রয়েছে ওই পোস্টে। রোগীদের ক্ষতি না করেই স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসকও চলে এসেছেন। ১৫ অগস্ট গাফিলতির জেরে শিশুমৃত্যুর কোনও অভিযোগ হয়নি।’’
সুপারের আরও দাবি, ওই তৃণমূল কর্মী আসলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে লোক-খেপাতেই এমনটা করেছেন। যদিও অভিযুক্ত চম্পকবাবুর দাবি, ‘‘আমি নই। আমার মোবাইল থেকে অন্য কেউ পোস্টটি করেছে।’’ চম্পকবাবুর পীরতলা মোড়ে একটি দোকান রয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘জরুরি কাজে ওই সময়ে মোবাইল ফেলে দোকান ছেড়ে গিয়েছিলাম। পোস্টের কথা জানতে পেরে তা মুছেও দিয়েছি।’’
এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘এমন ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে প্রথমে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি দরকার। সে বিষয়ে আবেদন জানাচ্ছি।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার বক্তব্য, ‘‘সুপার বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy