কালী প্রতিমার কাঠামো তোলাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছিল গোলমাল। তার সূত্র ধরে, শনিবার ছটের ঘাট তৈরির সময়েও গোলমাল পাকল পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার ইস্ট কেন্দা এলাকায়। হামলা, পাল্টা মারধরের অভিযোগে নাম জড়াল তৃণমূলের জনপ্রতিনিধির ছেলের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে এলাকার কয়েক জন যুবক পুকুর থেকে কালী প্রতিমার কাঠামো তুলে নিয়ে যান। অভিযোগ, এর পরেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের পুতুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে প্রসেনজিৎ দলবল নিয়ে ওই যুবকদের পাড়ায় গিয়ে দাবি করেন, ওই কাঠামো তাঁদের পরিবারের প্রতিমার। তা তুলে আনার জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। সে নিয়ে বচসার সময়ে এক মহিলাকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে কয়েকশো বাসিন্দা পরে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রসেনজিৎকে বার করে মারধর করে বলে অভিযোগ।
শনিবার সকালে ফের অশান্তি বাধে ছটপুজোর জন্য একটি পুকুরের ঘাট সাফাইয়ের সময়ে। অভিযোগ, প্রসেনজিতের কাকা তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির লোকজন দাবি করেন, এটি তাঁদের পারিবারিক পুকুর। সেখানে কাউকে ছট উৎসব করতে দেওয়া হবে না। তাতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, এই পুকুরটি রাষ্ট্রায়ত্ত খনি সংস্থা ইসিএলের। এ নিয়ে বিবাদ বেধে যায়। পুলিশ ও জামুড়িয়ার তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিংহ এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এরই মধ্যে অভিযোগ ওঠে, কোলিয়ারি থেকে ইস্ট কেন্দা আবাসন এলাকায় পাইপলাইনে যে জল পাঠানো হয়, সন্দীপের ছেলে চিরঞ্জিৎ লোকজন নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের চাপ দিয়ে সেখানে জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে ফের এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিধায়কের হস্তক্ষেপে আবার জল সরবরাহ শুরু হলে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, প্রসেনজিৎ ও চিরঞ্জিৎ দু’জনই এলাকার মানুষজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। প্রসেনজিৎ বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি দেওয়া হয়। তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ লেখা একটি বোর্ড নিজের গাড়ির সামনে ঝুলিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়ান বলেও অভিযোগ। জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ পুতুলের দাবি, তিন বছর তাঁদের পারিবারিক কালী প্রতিমার কাঠামো বিসর্জনের পরে চুরি হয়েছে। এ বার চুরির চেষ্টা ধরে ফেলায় তাঁদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার দু’টি গাড়ি আছে। কখনও কখনও ছেলে তার মধ্যে একটি গাড়ি নিয়ে বেরোয়। তাতে আমার পদ লেখা বোর্ড থাকতে পারে।” সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, শাসক দল রাজ্য জুড়ে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি করছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)