Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

নদী গিলছে ভিটে-রাস্তা, যাব কোথায় !

পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বনানী মাঝি। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সুচন্দ্রা দে। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।উদ্ধারণপুর বেনেপাড়া সংসদের বিধানপল্লিতে বছর ছয়েক আগে নির্মিত কাঁদরের উপর কাঠের সেতু গত বারের বন্যায় ভেঙে গিয়েছে। যাতায়াতে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে।অভিমন্যু হালদার, সীতাহাটি

জেটি নেই, ভাঙা খেয়াঘাটেই চলে যাতায়াত। —অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

জেটি নেই, ভাঙা খেয়াঘাটেই চলে যাতায়াত। —অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৪৯
Share: Save:

উদ্ধারণপুর বেনেপাড়া সংসদের বিধানপল্লিতে বছর ছয়েক আগে নির্মিত কাঁদরের উপর কাঠের সেতু গত বারের বন্যায় ভেঙে গিয়েছে। যাতায়াতে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে।

অভিমন্যু হালদার, সীতাহাটি

সভাপতি: তৎকালীন বিডিও-র উদ্যোগে কাঠের সেতু গড়া হয়েছিল। সভাপতি হওয়ার পরে ৫৬ লক্ষ টাকার হিসাব দিয়েছিলাম সাংসদকে। সাংসদ কোটার টাকায় পাকা সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল।

উদ্ধারণপুর খেয়াঘাটের বাসস্ট্যান্ড থেকে দাসপাড়া পর্যন্ত ২০০ মিটার রাস্তা অত্যন্ত বেহাল। বিধানসভা ভোটের আগে বিধায়ক প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই রাস্তা এখনও তৈরি হয়নি।

প্রণবেশ চট্টোপাধ্যায়, সীতাহাটি

সভাপতি: ওটা যেহেতু পঞ্চায়েতের রাস্তা তাই সীতাহাটি পঞ্চায়েত প্রধানকে রাস্তা সংস্কারের জন্য বলেছি। উনি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গঙ্গা ভাঙন উদ্ধারণপুরের একটি ভয়াবহ সমস্যা। প্রতি বছরই পাড় ভাঙছে। সীতাহাটিতে সেচ দফতরের অতিথি নিবাসটিও গত বছর ভেঙেছে। ভাঙনের জন্য রাস্তার হালও বিপজ্জনক। কিছু ভাবছেন?

চিত্তরঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, সীতাহাটি

সভাপতি: এ বিষয়ে গত বছর কেন্দ্রের জলসম্পদ বিভাগকে জানিয়েছিলাম। তার কোনও উত্তর এখনও আসেনি। তার আগে মহকুমাশাসক ও জেলাশাসককেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল।

নলিপুর থেকে কেউগুড়ি পর্যন্ত এলাকায় পানীয় জল প্রকল্পের রিজার্ভার নেই। নৈহাটি থেকে শাঁখাই পর্যন্ত রাস্তার ধারেও কোনো পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। নিত্যযাত্রীদের অসুবিধার মুখে পড়তে হয়।

তারক বন্দোপাধ্যায়, নৈহাটি

সভাপতি: জল প্রকল্পের জন্য জায়গা বাছাই চলছে। জায়গা পেলেই সমস্যার সুরাহা হবে।

কৃষিপ্রধান গ্রাম, অথচ সেচের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। ফি বছর বন্যায় জমি ডুবে যায়। সাবমার্সিবল পাম্পের ব্যবস্থা হলে চাষবাসে কিছুটা সুবিধা হয়।

মীর শাহজামান, কেউগুড়ি

সভাপতি: বিষয়টি জানা ছিল না। আবেদন পেলে সাবমার্সিবল লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে।

বছর সাতেক ধরে নৈহাটি বাঁশিসাঁকো থেকে মৌগ্রাম পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে যান চলচল তো দূর, হেঁটে গেলেও বিপদ ঘটার আশঙ্কা থাকে।

আশা মাঝি, নৈহাটি

সভাপতি: জেলাশাসক ও জেলা পরিষদকে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আবেদন করা হয়েছে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জুলাইয়ে পরিদর্শন করে গিয়ে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সীতাহাটি-কালীতলা থেকে রামপুকুরধার পর্যন্ত ভাঙা মোরাম রাস্তাটি পঞ্চায়েত ঢালাই করে দিতে চাইলেও গ্রামবাসীরা তা চান না। আমরা পাকা রাস্তা চাই। নিকাশি ব্যবস্থাও ঠিক নেই।

গঙ্গাধর মণ্ডল, সীতাহাটি

সভাপতি: পঞ্চায়েতের পাকা রাস্তা করার অনুমতি নেই। তবে ওই রাস্তায় ঢালাইয়ে যাতে কোনও খুঁত না থাকে, সামগ্রী যাতে উন্নতমানের হয় এ বিষয়টি দেখা হবে।

গাবতলা থেকে কাশী হাজরার বাড়ি পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার রাস্তা বছর দশেক ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই রাস্তাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি যাওয়ার একমাত্র পথ হওয়ায় যাতায়াতে সমস্যা হয়।

দেবনারায়ণ সরকার, শিলুড়ি

সভাপতি: সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে রাস্তা সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হবে।

লো ভোল্টেজের সমস্যা রয়েছে উদ্ধারণপুরের বেশ কিছু এলাকায়। দিনে ১৫ বার করে লোডশেডিং হয়। কৃষিপ্রধান এলাকা হওয়ায় সাবমার্সিবল পাম্প চালাতেও অসুবিধা হয়।

অনুপ মাঝি, উদ্ধারণপুর

সভাপতি: বেনেপাড়ার রিভার লিফ্ট ইরিগেশনের একটিই ট্রান্সফর্মার এলাকায় থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে। নতুন ট্রান্সফর্মার তৈরির জন্য বিদ্যুৎ দফতরে আবেদন করা হয়েছে।

নলিয়াপুরে দুটো পানীয় জল প্রকল্প থাকলেও সেই জল শিলুড়ি পৌঁছয় না। জলের লাইন গেলেও শুধুমাত্র দত্তবাটিতেই জল মিলছে।

জঙ্গল দাস, সীতাহাটি

সভাপতি: বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখব।

শিবলুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বছর চারেক ধরে কোনও চিকিৎসক নেই। ওষুধপত্রও চুরি হয়ে যায়। স্বাস্থ্য পরিষেবার মান অনুন্নত। জ্বর হলেও কাটোয়া হাসপাতালে ছুটতে হয়। যদি চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা যেত তাহলে অনেকে উপকৃত হতেন।

বর্ণালী হাটুই, শিবলু্‌ন

সভাপতি: ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যাতে প্রতিদিন চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন সে বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেছি।

বিখ্যাত লেখক কৃষ্ণদাস কবিরাজের বাড়ির জায়গা-জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই মাঠে পাটবাড়ি মেলা হয়। বেদখল হলে মেলা বন্ধ হয়ে যাবে।

গিরিধারী দাস, ঝামটপুর

সভাপতি: জানা নেই। খোঁজ নেব।

সীতাহাটি, মৌগ্রাম, নতুনগ্রামে কয়লার স্টিমার চলাচলের জন্য ঘাট ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙনে বাড়িঘরও তলিয়ে যাচ্ছে।

হাসিবুর রহমান, নতুনগ্রাম

সভাপতি: সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

সীতাহাটিতে একটিমাত্র কো-এড বিদ্যালয় রয়েছে। একটি বালিকা বিদ্যালয়ের খুব দরকার।

অর্চনা চট্টোপাধ্যায়, সীতাহাটি

সভাপতি: শিক্ষা দফতরের নজরে আনব বিষয়টি।

উদ্ধারণপুর ঘাটের কোনও সৌন্দর্যায়ন হয়নি। যাত্রীনিবাসও নেই। অথচ প্রায়শই পুণ্যার্থীদের ভিড় হয় ঘাটে। বৈদ্যুতিক চুল্লি না থাকায় দূষণও বাড়ছে।

অভিজিৎ মল্লিক, উদ্ধারণপুর

সভাপতি: দ্রুত আধুনিক চুল্লির ব্যবস্থা করা হবে। এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

question
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE