প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের তালিকা ক্রমশ বেড়েই চলেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায়। সম্প্রতি এক ভিক্ষাজীবী বিশেষ ভাবে সক্ষম যুবক আবাস প্রকল্পে তাঁর নামে বরাদ্দ টাকা অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। মৃতের নামে বরাদ্দ টাকাও একই ভাবে ‘বেহাত’ হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এর পিছনে তৃণমূল পরিচালিত নান্দাই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। সোমবার কালনা ১ বিডিও-র কাছে ওই পঞ্চায়েতের আরও তিন ব্যক্তি তাঁদের পরিবারের মৃতদের নামে বরাদ্দ করা টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ লিখিত ভাবে জমা দিলেন। তাঁরাও গোটা ঘটনার জন্য পঞ্চায়েতের প্রধান এবং এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। আবাস প্রকল্প নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেও। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান ঝুমুর ঘোষকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এসএমএস-এর জবাব দেননি। তবে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান লিয়াকত শেখ দাবি করেছেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে কিছু লোক প্রধানকে ফাঁসাতে চাইছেন।’’
এই প্রকল্পে গরিব উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির জন্য ধাপে ধাপে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ দিন ব্লক অফিস থেকে বেরিয়ে পেশায় খেতমজুর দুপসা গ্রামের ভ্যাবল মোল্লা বলেন, ‘‘মা নুরনাহার বিবি বছর সাতেক আগে মারা গিয়েছেন। সম্প্রতি জানতে পেরেছি, মায়ের নামে সরকারি প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ হলেও, সে টাকা অন্য লোকে পেয়েছে। ওই টাকা যাতে আমাকে ঘর তৈরির জন্য দেওয়া হয়, বিডিও-কে তা জানিয়েছি।’’
কুত্তিরডাঙা গ্রামের ষাটোর্ধ বৃদ্ধা সুশীলা বিশ্বাসের দাবি, তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। তবে তাঁর নামে আবাস যোজনায় টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দুর্নীতি করে সে টাকা অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টে পাঠিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কোনও রকমে একটি টিনের ঘরে থাকি। ওই টাকাটা পেলে, নিজের একটা ভাল ঘর তৈরি হত।’’