Advertisement
E-Paper

সমস্যা মিটে যেত আগেই, দাবি কুলটিতে

বৃহস্পতিবার জামুড়িয়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কুলটি, জামুড়িয়ায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। আগামী দিনে জলের সমস্যা মেটানো হবে।’’ পরে দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, সমস্যা শুরুর আগেই ব্যবস্থা করতে হবে।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৯
আসানসোল পুরসভার নানা এলাকায় এমন ছবি দেখা যায় প্রায়ই। ছবি: পাপন চৌধুরী

আসানসোল পুরসভার নানা এলাকায় এমন ছবি দেখা যায় প্রায়ই। ছবি: পাপন চৌধুরী

গরমে খনি-শিল্পাঞ্চলে জলের সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এখন থেকে সে ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যসচিবও। তার পরেই নড়ে বসেছে পুরসভা ও প্রশাসন। নির্মীয়মাণ জলপ্রকল্পগুলির কী পরিস্থিতি, তা ঘুরে দেখছেন আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা।

বৃহস্পতিবার জামুড়িয়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কুলটি, জামুড়িয়ায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। আগামী দিনে জলের সমস্যা মেটানো হবে।’’ পরে দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, সমস্যা শুরুর আগেই ব্যবস্থা করতে হবে। মুখ্যসচিব মলয় দে-ও বলেন, ‘‘পশ্চিম বর্ধমানে এ বার একটু পানীয় জলের সমস্যা হতে পারে। সেটা নিয়ে পদক্ষেপ করতে হবে।’’ প্রশাসনের আধিকারিকেরা দুর্গাপুরের সভায় ১৭টি প্রকল্প থাকার কথা জানান। পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘কুলটি জলপ্রকল্পের প্রথম পর্বের কাজ ফেব্রুয়ারির আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। রতিবাটি, উখড়া, সালানপুরেও কাজ করছে পূর্ত দফতর।’’ ওই সভার পরেই পুরসভা ও প্রশাসনের মধ্যে জলের সমস্যা সমাধানে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

পানীয় জলের সমস্যা সবচেয়ে বেশি কুলটি বরো এলাকায়। এখানকার বিদায়গড়, দক্ষিণ রানিতলা, বিডিওপাড়া, চিনাকুড়ি, কেন্দুয়া বাজার-সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় তিন কিলোমিটার দূর থেকে জল বয়ে আনতে হয়। আসানসোলের ধাদকা, রেলপাড়, গাড়ুই, সুইডি, বার্নপুরের ছোটদিঘাড়ি, পুরনোহাট, শান্তিনগর এলাকাতেও জল-সঙ্কট রয়েছে। এমনকি, কিছু এলাকায় কাদা-মিশ্রিত জল সরবরাহের অভিযোগও উঠেছে। সঙ্কট রয়েছে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ বরো এলাকাতেও। পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ সমস্যা মেটাতে অবস্থান-বিক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠিও দিয়েছিলেন।

এত দিনেও জল-সমস্যা না মেটার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করছে বিরোধীরা। আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী অভিযোগ করেন, ২০০৭ সালে এডিডিএ-র উদ্যোগে কুলটিতে জল-সঙ্কট মেটাতে ১৩২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিল। সেই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র টাকা বরাদ্দ করলেও সাবেক কুলটি পুরসভা তা রূপায়ণ করতে পারেনি। সেটি করা গেলে এত দিনে জলের সমস্যা মিটে যেতে পারত বলে মনে করছেন কুলটির বাসিন্দাদের অনেকেও।

পূর্ণশশীবাবু অবশ্য জানান, কুলটিতে প্রায় ২৩৯ কোটি টাকার জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। পাইপলাইন পাতার কাজ প্রায় শেষ। দামোদরে সাবমার্সিবল বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গ্রীষ্মের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তাঁর আশা। এ ছাড়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য দু’টি উচ্চ জলাধার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘আসানসোল বরোর ৫০টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২৫ লক্ষ গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন ১৪টি উচ্চ জলাধার তৈরি হচ্ছে। আগামী বছরের গোড়া থেকে পাইপলাইন পাতা হবে। ২০২০-র গোড়া থেকে শহরবাসী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে এই পরিকল্পনা সফল হলে কুলটি, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়াতেও একই পদক্ষেপ করা হবে।

Water Crisis Kulti Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy