Advertisement
E-Paper

কয়লা খসে জখম তিন, প্রশ্নে নিরাপত্তা

খনি শ্রমিকেরা জানান, কয়লা কাটার জন্য সাধারণত কয়লাস্তরে প্রথমে ড্রিল বা গর্ত করতে হয়। সেই গর্তে বারুদ পুরে ঘটনো হয় বিস্ফোরণ। তার পরে সেখান থেকে কয়লা তোলা হয়।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:১২
জটলা: এই খনিতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। —নিজস্ব চিত্র।

জটলা: এই খনিতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। —নিজস্ব চিত্র।

ফের খনিতে দুর্ঘটনা পশ্চিম বর্ধমানে। এ বার খনিগর্ভে ছাদ থেকে কয়লা পড়ে জখম হলেন তিন কর্মী। শুক্রবার গভীর রাতে কুনস্তোরিয়া কোলিয়ারির ৩ নম্বর খনির ঘটনা।

খনি শ্রমিকেরা জানান, কয়লা কাটার জন্য সাধারণত কয়লাস্তরে প্রথমে ড্রিল বা গর্ত করতে হয়। সেই গর্তে বারুদ পুরে ঘটনো হয় বিস্ফোরণ। তার পরে সেখান থেকে কয়লা তোলা হয়। খনি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত আড়াইটা নাগাদ, খনিগর্ভে কয়লা কাটার জন্য রশিদ মিঞা, ভ্রমর বাউরি ও জগজীবন প্রসাদ নামে তিন কর্মী গর্ত কাটছিলেন। সেই সময়েই উপরের ছাদ থেকে কয়লা পড়ে আটকে পড়েন তিন শ্রমিক। জখম হন তিন শ্রমিকই।

তিন জনকেই দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, রশিদ কোমর, হাত ও ঘাড়ে চোট পেয়েছেন। ভ্রমরবাবুর বাঁ হাত ভেঙেছে ও মাথা ফেটেছে। জগজীবনবাবুও হাতে চোট পেয়েছেন।

দুর্ঘটনার খবর চাউর হতেই কেকেএসসি ও এইচএমএস-এর নেতৃত্বে খনিকর্মীরা শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রেখে শ্রমিক-নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, খনি-সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেন না কর্তৃপক্ষ। তাই বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের শাস্তিরও দাবি জানান শ্রমিকেরা।

কিন্তু কেন ঘটছে দুর্ঘটনা? দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করা একাধিক প্রবীণ খনি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, নিয়মিত ভাবে কয়লার ছাদ ও দেওয়াল লম্বা লোহার শাবল দিয়ে ঝাড়াইয়ের কাজ করতে হয় ঠিক ভাবে। বর্তমানে যেখানে কয়লা উত্তোলনের কাজ হচ্ছে (গ্রিন-রুফ), সেখানে উপযুক্ত ব্যবস্থা (সাপোর্ট) নেওয়া বাধ্যতামূলক। যেমন, ছাদ বা দেওয়ালে যদি কোনও ফাটল থাকে, তার জন্য বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে উৎপাদন বন্ধ রেখেও সুরক্ষার কাজ আগে করতে হবে। শ্রমিকদের অভিযোগ, এই কাজেই খামতি রয়েছে।

এই ভাবে খনির ছাদ থেকে কয়লা পড়ে অতীতেও বহু বার দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটেছে শ্রমিকদের। এক প্রবীণ খনিকর্মী জানান, ১৯৯৬-র ১৩ নভেম্বর সাতগ্রাম ইনক্লাইনে চার জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ২০০৯-র ২৭ অগস্ট সাতগ্রাম প্রজেক্টেও দুই শ্রমিক ছাদ চাপা পড়ে মারা যান।

ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল মাইন ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সম্পাদক তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়, সিটু নেতা মনোজ দত্তদের ক্ষোভ, ‘‘সুরক্ষা কমিটির জন্য প্রচুর পরিমাণে টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সেই টাকায় আধুনিক প্রযুক্তি এনে শ্রমিক-সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেন না খনি কর্তৃপক্ষ। তাই ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা।’’ ওই কোলিয়ারির ম্যানেজার চন্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যেখানে গর্ত করা হচ্ছিল, সেখানে সামান্য ফাটল ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনার বিষয় তদন্ত করে দেখা হবে।’’

জামুড়িয়া Jamuria Coal Mine Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy