Advertisement
E-Paper

চাষে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, পুলিশকে নালিশ বামেদের

চাষের কাজে অহরহ বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, এমন অভিযোগ তুলে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে চাষিদের নিরাপত্তার দাবি জানাল বাম কৃষক সংগঠনগুলি। মঙ্গলবার সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপির কৃষক সংগঠনের নেতারা এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার সঙ্গে দেখা করে এই বর্ষায় চাষিরা যাতে খরিফ ধানটুকু নিশ্চিন্তে চাষ করতে পারেন তার ব্যবস্থা করার আবেদন জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০০:২২
এসপির কাছে আর্জি জানিয়ে বেরিয়ে আসছেন বাম প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র।

এসপির কাছে আর্জি জানিয়ে বেরিয়ে আসছেন বাম প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র।

চাষের কাজে অহরহ বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, এমন অভিযোগ তুলে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে চাষিদের নিরাপত্তার দাবি জানাল বাম কৃষক সংগঠনগুলি। মঙ্গলবার সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপির কৃষক সংগঠনের নেতারা এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার সঙ্গে দেখা করে এই বর্ষায় চাষিরা যাতে খরিফ ধানটুকু নিশ্চিন্তে চাষ করতে পারেন তার ব্যবস্থা করার আবেদন জানান।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিপিএমের নেতা অচিন্ত্য মল্লিক, রাজ্জাক মণ্ডল, উদয় সরকার, সৈয়দ হোসেন, বীরেশ মণ্ডল, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা নন্দলাল পণ্ডিত, সমর ঘোষ প্রমুখ। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের অত্যাচারে গ্রামছাড়া হয়েছেন ৪৮০ জন বাম সমর্থক কৃষক। জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ১৪৫৬ জন ছোট চাষি, বর্গাদার, পাট্টাদার ও সরকারি খাস জমিতে চাষ করা ভূমিহীন চাষিকে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০০ বিঘে জমিতে ধান, আলু, সব্জি, সর্ষে বা তিল চাষ করতে পারছেন কৃষকেরা না বলে তাঁদের দাবি। ফলে কার্যত রোজগার হারিয়েছেন চাষিরা।

সিপিএমের সারা ভারত কৃষক সভার সম্পাদক তথা সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলের অভিযোগ, “আমাদের ওই চারটি কৃষক সংগঠনের ১৮ জন নেতা ও কর্মীকে গত বিধানসভা ভোটের পরে খুন করা হয়েছে। শাসকদলের অনুগত নন, শুধু এই অপরাধে কোটি-কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে অসংখ্য সমর্থককে। অনেককেই জাবিকা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রায় হাজার বিঘের উপর চাষ করা ফসল হয় নষ্ট করা নয়তো কেটে নেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, “আমাদের সমর্থক চাষি, বর্গাদারদের উপর অত্যাচারের কথা একাধিকবার ব্লক আধিকারিক, মহকুমা আধিকারিক ও বিভিন্ন থানার আধিকারিককে জানিয়েছি। তা সত্বেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। উল্টে আমাদের কর্মী বা সমর্থকদের বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে ৪৬৬টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তের সংখ্যা ২৬১৫ জন।” গ্রামে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে আন্দোলন করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বিশেষত তৃণমূলের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে পুলিশও মিথ্যা মামলায় চাষিদের ধরছে বলে তাঁর অভিযোগ।

পুলিশের কাছে তাঁদের মূল আবেদন, এ বারের বর্ষায় যেন গ্রামে থাকা তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা নিজেদের জমি চাষের সুযোগ পান। কিন্তু পুলিশ কি এমন নিশ্চয়তা দিয়েছে? রাজ্জাকের দাবি, “এসপি আমাদর বলেছেন, আপনারা আদালতে গিয়ে মামলা করে জমিতে চাষ করার ব্যাপারে নির্দিষ্ট রায় আনুন। তারপরই পুলিশ আপনাদের সাহায্য করতে পারে।” তাঁর প্রশ্ন, জমিতে চাষ করতে যদি আদালতেই যেতে হয়, তাহলে প্রশাসন কী করছে? এছাড়া রায়তি, বর্গা, পাট্টা ও দখলিকৃত জমি থেকে উৎখাত হওয়া চাষিদের জমি দ্রুত ফেরানো, ঘরছাড়াদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা ও মিথ্যা মামলা ও পুলিশি নির্যাতন বন্ধ করারও আর্জি জানান তাঁরা।

এসপি বলেন, “আদালতের নির্দেশ ছাড়া আমরা জমিজমার বিষয়ে কিছুই করতে পারি না। এ দিন সিপিএম-সহ বাম দলের নেতারা আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যে অনেক জায়গায় তাঁদের লোকেদের জমি অন্য রাজনৈতিক দলের লোকেরা পতাকা পুঁতে দখল করে নিচ্ছে। কোথাও চাষ করতে বা ফসল তুলতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি বলেছি, এমনটা ঘটলে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। পুলিশ তদন্ত করে যদি দেখে অভিযোগ সত্যি, তাহলে তা মহকুমাশাসককে জানানো হবে।” আর ঘরছাড়াদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওঁদের বলেছি ঘরছাড়াদের তালিকা দিতে। কেন ওই লোকেরা ঘরছাড়া তা খতিয়ে দেখব। এমনও তো হতে পারে, মামলা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।”

bardhaman left front rice harvest kharif
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy