Advertisement
E-Paper

কর্মী-স্মরণে এলেন না নেতারা

নিহত শঙ্করবাবুর বাবা মধুসূদন ঘোষের আক্ষেপ, ‘‘আমাদের দলই এখন শাসক। তবে শহিদদের কেউ খোঁজ নিচ্ছেন না।’’ এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, দলের নেতারা ফি বছর শহিদ পরিবারগুলিকে নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তার কিছুই পূরণ হয় না।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:২৪
বাসুদেবপুরে। নিজস্ব চিত্র

বাসুদেবপুরে। নিজস্ব চিত্র

দু’জনের গ্রামের দূরত্ব পনেরো কিলোমিটারের মধ্যে। দু’জনের নিহত হওয়ার সময়ের ব্যবধান দু’দশক। কিন্তু গত রবিবার রাতে বিজেপি কর্মী খুনের পরে ১২ ডিসেম্বর ফি বছরের মতো এ বার আর দলীয় কর্মীদের স্মরণে কাঁকসার বাসুদেবপুর গ্রামে পা বাড়ালেন না তৃণমূলের জেলা নেতাদের কেউই। বুধবার এমনই অভিযোগে ক্ষোভপ্রকাশ করল দু’দশক আগে খুন হওয়া বাসুদেবপুরের তৃণমূল কর্মীর পরিবার ও গ্রামবাসী।

১৯৯৮-র ১২ ডিসেম্বর বিদবিহার পঞ্চায়েতের এই গ্রামেই খুন হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী শঙ্কর ঘোষ। ঘটনায় সিপিএমের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার আগে ১১ ডিসেম্বর বাসুদেবপুরের পাশের গ্রাম বিনোদপুরের বাসিন্দা সিপিএম নেতা আশিস গোস্বামীও খুন হয়েছিলেন। ১৯৯৮-র পরে বেশ কয়েক বছরে অমর গোস্বামী, নবগোপাল ডোম এবং লক্ষ্মীনারায়ণ ঘোষ নামে তিন তৃণমূল কর্মীও খুন হন।

শঙ্করবাবুর খুনের পরে কাঁকসায় এসেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই ১২ ডিসেম্বর, দলকে এই গ্রামে শহিদ দিবস পালনের নির্দেশ দেন। তার পরে থেকে বাসুদেবপুরে এই দিনটিতে শঙ্করবাবু-সহ চার জন তৃণমূল কর্মীর স্মরণে শহিদ দিবস পালিত হয়। প্রতি বছরই সেখানে আসেন ব্লক ও জেলাস্তরের তৃণমূল নেতারা। কিন্তু এ বার তাঁদের দেখা মেলেনি বলেই অভিযোগ এলাকাবাসীর।

কেন এমনটা? তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এলাকায় একটা শোকের পরিবেশ রয়েছে। তাই এ দিন শহিদ দিবস পালন করা হয়নি।’’ যদিও দিনটি পালন করেছেন ওই ঘটনার পরে তৃণমূলের বরাবরের শক্ত-ঘাঁটি বলে পরিচিত বাসুদেবপুরের বাসিন্দারা এবং নরেশ ঘোষ-সহ গ্রামের কয়েক জন তৃণমূল নেতা। নিজেরাই শহিদবেদীতে শঙ্করবাবু-সহ চার তৃণমূল কর্মীর ছবিতে মাল্যদান করেন। তবে সেই সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস ঘোষ, শুভম ঘোষদের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এখানে এসে শহিদ দিবস হিসেবে দিনটি পালন করার কথা বলেছিলেন। এ বার তো নেতাদের দেখাই পেলাম না।’’

নিহত শঙ্করবাবুর বাবা মধুসূদন ঘোষের আক্ষেপ, ‘‘আমাদের দলই এখন শাসক। তবে শহিদদের কেউ খোঁজ নিচ্ছেন না।’’ এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, দলের নেতারা ফি বছর শহিদ পরিবারগুলিকে নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তার কিছুই পূরণ হয় না। গত বছর এখানে এসেছিলেন গলসির বিধায়ক অলোক মাঝি। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার জন্য এ দিন গ্রামে যেতে পারিনি। তবে গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে সবসময় আছি। দলের আর কেউ কেন যাননি, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’’

তবে তৃণমূল নেতাদের গ্রামে না আসার অন্য আরও একটি ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন লাগোয়া এলাকার রাজনৈতিক নেতারা। বাসুদেবপুর থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যেই রূপগঞ্জ, খুন হওয়া বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষের গ্রাম। ঘটনাচক্রে, বাসুদেবপুর আবার যে পঞ্চায়েতের অন্তর্গত, সেই বিদবিহারেরই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সইফুল-সহ কয়েক জন সন্দীপ খুনে অভিযুক্ত। তবে দু’গ্রামই চায়, রাজনীতি বা যে কোনও কারণে হানাহানি বন্ধ হোক।

TMC Martyrs CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy