বোমাবাজির চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র
সন্ধের আগেই তারা বাজারে এসে আলাদা দলে ভাগ হয়ে অপেক্ষা করছিল জনা বারো যুবক। অন্ধকার নামতেই এক জোট হয়ে চড়াও হয় দু’টি গয়নার দোকানে। কেউ যাতে প্রতিরোধ করতে না পারে সে জন্য দেদার বোমাবাজি চালায়। কালনার মাতিশ্বর বাজারে এ ভাবেই এক দল দুষ্কৃতী লুঠপাট চালিয়ে চম্পট দিল শনিবার সন্ধ্যায়।
রবিবার রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ভরসন্ধ্যায় এ ভাবে লুঠপাটে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়। এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।’’
কালনা ও মেমারির সীমানাবর্তী এলাকায় পুরনো এই বাজারে রয়েছে প্রচুর দোকানপাট। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুষ্কৃতীরা বাজারে এসে প্রথমে ভাগ হয়ে গিয়ে বিভিন্ন দোকানে চা, শিঙাড়া, মিষ্টি খায়। সন্ধে ৬টার পরে সশস্ত্র তিন জন করে দু’টি গয়নার দোকানে ঢুকে পড়ে। বাইরে আরও কিছু দুষ্কৃতী তখন নজরদারি চালাচ্ছিল। বাসিন্দাদের দাবি, তাদের বেশির ভাগেরই বয়স পঁচিশ-ত্রিশের মধ্যে।
একটি গয়নার দোকানের মালিক লক্ষ্মীকান্ত দাস বলেন, ‘‘দোকানে ধুপ-ধুনো দিচ্ছিলাম। হঠাৎ তিন জন কপাল ও বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে দোকানে যা আছে সব দিয়ে দিতে বলে। প্রাণভয়ে বাধা দিতে পারিনি। কয়েক লক্ষ টাকার গয়না ও নগদ নিয়ে চম্পট দিয়েছে ওরা। সঙ্গে ব্যাঙ্কের পাশবই, এটিএম কার্ড, হিসাবের খাতাও নিয়ে গিয়েছে।’’ পাশের দোকানের মালিক তপনকুমার বাগের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁকে শাবল দিয়ে মারধরও করে। তার পরে রিভলবার ঠেকিয়ে সোনা-রুপোর গয়না ও বেশ কয়েক হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনিট পাঁচেকের মধ্যে লুঠপাট শেষ করে বেরিয়ে এলাকার রাস্তায় দেদার বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা। ভরা বাজারে তখন প্রচুর লোকজন। আচমকা বোমাবাজিতে প্রাণ বাঁচাতে ছুটোছুটি শুরু করে দেন সকলে। ব্যবসায়ীরা দোকানের শাটার নামিয়ে দেন। বোমের স্প্লিন্টার লেগে আহত হন জনা দশেক বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়কে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একটি মাঠের পথ ধরে পালায় দুষ্কৃতীরা। কিলোমিটার খানেক দূরে দু’টি গাড়ি রাখা ছিল। সেগুলিতে চড়ে বৈচি রোড ধরে চম্পট দেয় তারা।
রবিবার মাতিশ্বর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রশান্ত সরকার বলেন, ‘‘এই ঘটনায় ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। পুলিশের এলাকায় একটি ক্যাম্প করা উচিত।’’ পুলিশ জানায় দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে কিছু তথ্য মিলেছে। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy