আরোগ্যের পথে। নিজস্ব চিত্র
ভিন্-রাজ্যে গিয়ে চিকিৎসার খরচ শুনে পিছিয়ে এসেছিলেন এক রোগী এবং তাঁর পরিজনেরা। শেষমেশ নামমাত্র খরচে, এক মহিলার জরায়ুতে অস্ত্রোপচার করে প্রায় আট কেজি ওজনের টিউমার বাদ দিলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, অস্ত্রোপচার সফল ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর খানেক আগে টিউমার দানা বাঁধে বারাবনি ব্লকের মাজিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা, বছর চল্লিশের জারসুনা বিবির শরীরে। তার পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে অসুস্থ বোনের চিকিৎসা করান দিদি মিয়াজ্জুন বিবি। তিনি জানান, সেখানে চিকিৎসকেরা টিউমার নির্ণয় করতে পারলেও সীমিত পরিকাঠামো থাকায় তাঁরা অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নেননি। এর পরেই জারসুনাকে নিয়ে পরিবারের সদস্যেরা ছোটেন তামিলনাড়ুর ভেলোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে চিকিৎসকরা জানান অস্ত্রোপচার ঝুঁকিপূর্ণ এবং খরচ, ৯০ হাজার টাকা। খরচ শুনে জারসুনাকে নিয়ে পরিবারের লোক জন ফিরে আসেন আসানসোলেই।
সেখানেই শুক্রবার বিকেলে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন জেলা হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ আনারুল হক। তাঁর কথায়, ‘‘বিষয়টি খুবই জটিল ছিল। তবে সবটাই ঠিক ভাবে হয়েছে। রোগীও এখন ভাল আছেন। এক সপ্তাহের মতো পর্যবেক্ষণে রাখা হবে তাঁকে।’’
কিন্তু হাসপাতালে এ ধরনের অস্ত্রোপচার করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে কি? প্রশ্ন শুনেই আনারুল বলেন, ‘‘বিষয়টি জটিল হলেও অসম্ভব নয়। সামান্য ঝুঁকি নিয়েই চিকিৎসা শুরু করি।’’
চিকিৎসকদের দাবি, এ ধরনের অস্ত্রোপচারের আগে রোগীর শরীরে সিটি স্ক্যান করা হয়। অথচ সে ব্যবস্থা হাসপাতালে নেই। পরে অবশ্য হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস নিজ উদ্যোগে নিখরচায় বাইরে থেকে সিটি স্ক্যান করিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
সফল অস্ত্রোপচারের পরে খুশি রোগীর পরিবারও। এক আত্মীয় বলেন, ‘‘নামমাত্র খরচে ডাক্তারবাবুরা অপারেশন করেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ।’’ সুপার নিখিলবাবু বলেন, ‘‘সীমিত পরিকাঠামোয় সাম্প্রতিক অতীতে এমন জটিল অথচ সফল অস্ত্রোপচার খুব কমই হয়েছে। আমরা খুব খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy