প্রতীকী ছবি।
কেঁচো খুঁড়তে অজগর যেন!
উপভোক্তাকে অন্ধকারে রেখে এলাকায় সরকারি প্রকল্পের ঘরে পার্টি অফিস চালানোর অভিযোগ আগেই উঠেছে। এ বার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকার কাঠুরিয়াপাড়া এলাকাতে আরও দু’জনকে সরকারি প্রকল্পে ঘর না দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এলাকার তৃণমূল নেতা রামরঞ্জন সাঁতরার বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দা বুঝি মাঝি ও সাহেব হাঁসদা এ ব্যাপারে চিঠি লিখেছেন বিডিও-র উদ্দেশে। তাঁদের অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার জামালপুর ২ পঞ্চায়েতে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়েছে, ‘অনুচিত’ কাজ করার জন্যে ওই অভিযুক্ত নেতাকে সরকারি প্রকল্প মোতাবেক জমি দিয়ে বাড়ি তৈরি করে দিতে হবে। অভিযোগ না মানলেও রামরঞ্জনবাবু বলেছেন, “আমি দলের কর্মী। যা বলার দল বলবে।’’
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের “সিদ্ধান্ত না মানলে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’ বিডিও শুভঙ্কর মজুমদারও অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বুঝি মাঝি ও সাহেব হাঁসদা দাবি করেছেন, সম্প্রতি তাঁরা জানতে পেরেছেন তাঁদের নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জন্যে ঘর তৈরির টাকা এসেছিল। সে জন্য তাঁদের ছবিও তোলা হয়েছিল। কিন্তু রামরঞ্জন সাঁতরা ওরফে বুটে সে টাকা জোর করে নিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রাপক তালিকার ৪৪ নম্বরে বুঝি মাঝির নাম রয়েছে। আর গত আর্থিক বছরের প্রাপক তালিকায় ২৯ নম্বরে নাম রয়েছে সাহেব হাঁসদার। যদিও দুই অভিযোগকারীরই দাবি তাঁদের ঘর নেই। তাই তাঁরা এখনও কাঠুরিয়াপাড়ার বাঁধের উপরেই রাত কাটাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, বুঝিদেবীর নামে বরাদ্দ হওয়া টাকায় অন্য এক জনের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। সেই ব্যক্তি সে ঘরে বাসও করছেন। এ দিন বুঝিদেবীর অভিযোগ, ‘‘আমি ঘর নিতে চাইনি। কিন্তু আমাকে জোর করে ঘর দেওয়ার জন্যে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। টাকা এলেই বুটে সেই টাকা তুলে নিত। আর ছবি তোলা হত অন্য জনের। এ নিয়ে জানতে চাইলে ২০ হাজার টাকা দিয়ে আমার ভাঙা ঘর সংস্কার করে দেবে বলেছিল। তবে সেই টাকাটাও দেয়নি।’’
এমন সব অভিযোগের ভিত্তিতেই জামালপুর ২ পঞ্চায়েত এ দিন দুপুরে একটি সভা ডাকে। প্রধান মণিকা মুর্মু, উপপ্রধান উদয় দাস-সহ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ওই সভায় যোগ দেন। কাঠুরিয়াপাড়া এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের সুবল বর সভার শুরুতেই জানিয়ে দেন, “এ সব অভিযোগের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমাকে জানিয়ে ঘরও তৈরি হয়নি।’’ তৃণমূল সূত্রের দাবি, সভায় সিদ্ধান্ত হয় বুঝি মাঝি ও সাহেব হাঁসদার জন্য সরকারি প্রকল্পে ঘর করার মতো জমির ব্যবস্থা এবং এক কুঠুরির পাকা ঘর, চালা-সহ বারান্দা ও শৌচালয় নিজের খরচে তৈরি করে দিতে হবে রামরঞ্জন সাঁতরাকে। তৃণমূলের জামালপুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ পালের কথায়, “কেউ দোষ করলে খেসারত দিতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy