Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Murder

arrest: খুনে স্ত্রী, ‘প্রেমিক’ গ্রেফতার কালনায়

এ দিন আদালতে যাওয়ার সময়ে মনুরা অবশ্য দাবি করেন, মানিকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে তিনি মানিককে কখনও স্বামীকে খুন করতে বলেননি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৪৬
Share: Save:

যুবককে খুনের অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর ‘প্রেমিক’কে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, কালনার বেগপুর পঞ্চায়েতের পাথরডাঙা গ্রামের বাসিন্দা মোকশেদ শেখকে (২৮) খুনের পরিকল্পনায় তাঁর স্ত্রী মনুরা বিবি ও ‘বন্ধু’ মানিক মণ্ডল যুক্ত। মনুরার সঙ্গে মানিকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান তদন্তকারীদের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাতে নান্দাই পঞ্চায়েতের রামেশ্বরপুর গ্রামে একটি মাঠ থেকে মোকশেদের কাদামাখা দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর নাকের পাশে জমে ছিল চাপ রক্ত। ঘটনাস্থল থেকেই আহত অবস্থায় মানিককে উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার মোকশেদের পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে ছেলেকে এবং তাতে হাত রয়েছে মানিকের।

মানিক স্থানীয় সহজপুর বাজারে চা ও ডাব বিক্রির দোকান চালান। কালনা থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ পেয়ে দফায় দফায় জেরা করা হয় তাঁকে। পুলিশের দাবি, প্রথমে মানিক তাদের কাছে দাবি করেন, তাঁদের দু’জনকে কেউ মারধর করে চলে গিয়েছে। পরে, অবশ্য খুনের কথা কবুল করেন ওই যুবক, দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশের আরও দাবি, জেরায় তারা জেনেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সহজপুর বাজারের আশপাশেই ছিলেন পেশায় খড় বিক্রতা মোকশেদ। তাঁকে নিজের দোকানের কাছে ডেকে মানিক মোটরবাইকে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি হন মোকশেদ। যাওয়ার আগে মানিক ডাব কাটার ধারাল অস্ত্রটি সঙ্গে নেন। এর পরে, প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে রামেশ্বরপুর গ্রামের মাঠে যান তাঁরা।

পুলিশের দাবি, জেরায় মানিক তাদের জানিয়েছেন, প্রথমে তিনি ওই অস্ত্র দিয়ে মোকশেদের মাথায় আঘাত করেন। মোকশেদ ছটফট করতে থাকেন। তখন অন্ধকারের মধ্যে তিনি মোকশেদের দেহ ধানের জমিতে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে বেশ কিছু লোকজন ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় দেহ ফেলে রেখে পালাতে পারেননি মানিক। ওই সব লোকজনের কাছে মানিক দাবি করে, অন্য কেউ তাদের উপরে হামলা চালিয়ে পালিয়েছে।

তদন্তকারীদের আরও দাবি, মানিক তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন, মোকশেদ তাঁর বন্ধু ছিলেন। তবে মোকশেদের স্ত্রীর সঙ্গে মাস ছয়েক ধরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁর। এই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মোকশেদ। তাই দু’জনে পরিকল্পনা করেই তাঁকে খুন করা হয় বলে মানিক জানিয়েছেন, দাবি পুলিশের।

এ দিন আদালতে যাওয়ার সময়ে মনুরা অবশ্য দাবি করেন, মানিকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে তিনি মানিককে কখনও স্বামীকে খুন করতে বলেননি। তাঁর দাবি, ‘‘ঘটনার আগের দিন স্বামী আমাকে মারধর করেছিল। মানিক বলত, আমাকে কেউ মারলে তাকে সে খুন করবে। কিন্তু ও যে সত্যি সত্যি খুন করবে, ভাবিনি!’’

মানিকের পরিবারের অবশ্য দাবি, ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে। মোকশেদের দাদা জাকের শেখের বক্তব্য, ‘‘খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ শনিবার ধৃতদের কালনা আদালতে তোলা হলে দু’জনকেই চার দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE