Advertisement
E-Paper

বিশ্বাস করেই বিপদ, শিশু হারিয়ে খেদ

রবিবার দুপুরে এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তথা অনাময় হাসপাতালের সুপার অমিতাভ সাহা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২০
শিশু নিয়ে পালানোর এই ছবি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়।

শিশু নিয়ে পালানোর এই ছবি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়।

দালাল-রাজ রুখতে নানা সময়ে সচেতনতা প্রচার চালিয়েছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই দালাল-দৌরাত্ম্যের নাম করেই ভুল বুঝিয়ে শিশু চুরির অভিযোগ উঠল অনাময় হাসপাতালে। অভিযোগ, সদ্যোজাত ও প্রসূতি ‘সুরক্ষা’র জন্য ছ’হাজার টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে শিশু-সহ দম্পতিকে অনাময় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল এক মহিলা। সে রায়নার ওই দম্পতিকে জানায়, এখানে প্রচুর ‘দালাল’ রয়েছে, তাই প্রকল্পের টাকা পাওয়ার কথা যেন তাঁরা কাউকে না বলেন। এর পরেই ওজন করানোর নাম করে শিশুকন্যাকে নিয়ে সে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ।

রবিবার দুপুরে এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তথা অনাময় হাসপাতালের সুপার অমিতাভ সাহা। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এত রকম ভাবে সচেতন করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে, তার পরেও এত বড় কাণ্ড! পুলিশের হাতে দ্রুত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পরেই আমরা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি।” পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শক্তিগড় থানার পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে।

এর আগে বর্ধমানের এক নার্সিংহোম থেকে সদ্যোজাত চুরির অভিযোগ উঠেছিল। তবে জেলার কোনও সরকারি হাসপাতাল চত্বর থেকে সাম্প্রতিক কালে শিশু চুরির অভিযোগ আগে ওঠেনি। এ দিনের ঘটনার পিছনে অবশ্য সচেতনতার অভাবই বড় কারণ বলে মনে করছেন হাসপাতালের কর্তারা।

শোকার্ত রেণুকাদেবী। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রায়নার সিপটা গ্রামের রিমা মালিক। শুক্রবার সন্তানের জন্ম দেন। রবিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। তারই মধ্যে ‘আশাদিদি’ পরিচয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ জমান ওই মহিলা। সরকারি অনুদান পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁদের নিয়ে যান অনাময় হাসপাতালে। মাতৃযান ছেড়ে দিয়ে একশো টাকায় টোটো ভাড়া করে তাঁরা সেখানে যান বলে জানান রিমাদেবী ও তাঁর স্বামী সন্দীপবাবু। মহিলার সঙ্গে তাঁদের ফোন নম্বর দেওয়া-নেওয়াও হয়।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই দম্পতি অনাময় হাসপাতালে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পরে মহিলা সেখানে পৌঁছয়। সন্দীপকে নিয়ে সে হাসপাতালের ভিতরে দাঁড় করিয়ে আসে। তার পরেই রিমাদেবীর কোল থেকে শিশুকন্যাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় মহিলা। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘ওই তরুণী হাসপাতালে প্রায় ৫০ মিনিট ছিল। সন্দীপবাবু ও রিমাদেবীর কাছে আমাদের কর্মীরা বারবার জানতে চেয়েছিলেন, কেন এসেছেন তাঁরা। তখন তাঁরা কিছু জানাননি। জানালে এ রকম ঘটত না।’’ ওই দম্পতি পুলিশের কাছে দাবি করেন, ‘আশাদিদি’ পরিচয় দেওয়ায় তাঁরা মহিলাকে বিশ্বাস করেছিলেন। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে এই ভাবে ঠকে যাব, বুঝতেই পারিনি!’’

রিমাদেবী পুলিশের কাছে দাবি করেন, শিশুর ওজন না করলে টাকা মিলবে না বলে জানায় ‘আশাদিদি’। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সরল বিশ্বাসে মহিলার হাতে আমার প্রথম শিশুকে তুলে দিয়েছিলাম। এত বড় ক্ষতি করতে পারে ভাবতেই পারিনি!” রিমাদেবীর মা রেণুকা বাগ বলেন, ‘‘আমাদের অনেক সাহায্য করছিল মহিলা। ফোনেও কথা হয়েছে। বিশ্বাস অর্জন করে সর্বনাশ করে গেল।’’

Crime Child Theft Anamoy Hospita Burdwan Medical College and Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy