Advertisement
E-Paper

murder: শাশুড়িকে খুনের নালিশ, শ্বশুরবাড়ি থেকে ধৃত যুবক

পুলিশের দাবি, প্রসেনজিৎ জেরায় তাদের জানিয়েছে, শাশুড়ি তাঁর সংসার ভাঙার চেষ্টা করছিলেন। সে দেখা করে মীমাংসা করতে চেয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২১ ০৫:২০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শাশুড়ির মৃত্যুর ‘খবর’ পেয়ে বীরভূমের বোলপুরের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল সিউড়ির বাতরার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দোলুই। সৎকারের পরে, শ্বশুরবাড়িতেই ছিল সে। বুধবার গভীর রাতে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার পুলিশ শাশুড়িকে খুনে প্রসেনজিৎকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করল। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। পুলিশের দাবি, ধৃত জেরায় তাদের কাছে খুনের কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাতারের মাহাতা গ্রামে একটি মাটির বাড়ির বারান্দা থেকে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। লীলা আগরওয়াল (৪২) নামে ওই মহিলা আদতে বীরভূমের বোলপুরের মিশন কম্পাউন্ড রোডের বাসিন্দা। তবে বছর দেড়েক ধরে তিনি মাহাতার ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাঁর সঙ্গে মাহাতা গ্রামে থাকতেন বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা পাড়ার বাসিন্দা সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি তাঁরা বিয়ে করেন। লীলাদেবী খুন হওয়ার পরে, পুলিশ সুদীপ্তবাবুকে আটক করে। পুলিশের দাবি, তিনি তাদের জানান, কাজ সেরে বাড়ি ফিরে অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকেন। তখনই লীলাদেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ময়না-তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়, শ্বাসরোধ করে লীলাদেবীকে খুন করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় মৃতার প্রথম স্বামী রাজু আগরওয়াল পুলিশকে লিখিত ভাবে জানান, লীলাদেবী দ্বিতীয় বিয়ে করার পরে, ভাতারে থাকছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তাঁর মেয়ে প্রীতিকে ফোন করে সুদীপ্তবাবু জানান, লীলাদেবীর হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে। রাজুবাবু পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, লীলাদেবীর গলায় ফাঁসের চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের সন্দেহ হয়, তাঁকে খুন করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, ঘটনার সূত্র ধরে তারা বোঝে, সুদীপ্তবাবু খুনে জড়িত নন। লীলাদেবী যেখানে ভাড়া থাকতেন, মাহাতা গ্রামের সেই ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও বিশেষ কোনও সূত্র মেলেনি। এর পরেই লীলাদেবীর প্রথম পক্ষের স্বামী, ছেলে আকাশ ও মেয়ে প্রীতিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। তদন্তে জানা যায়, প্রীতির সঙ্গে তাঁর স্বামী প্রসেনজিতের সম্পর্ক ‘ভাল নয়’। প্রীতি সোমবার থেকে বোলপুরে বাপের বাড়িতে রয়েছেন। পুলিশের দাবি, প্রীতি তাদের কাছে দাবি করেন, বিকেল ৩টে নাগাদ মায়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। আর রাতে দুঃসংবাদ পান। এর মধ্যে বিকেলের পর থেকে প্রসেনজিতের ফোন বন্ধ ছিল। এর পরেই পুলিশ প্রসেনজিতের গতিবিধি খোঁজ করতে শুরু করে। মোবাইল ফোনের অবস্থানের সূত্র ধরে জানা যায়, দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রসেনজিত মাহাতা থেকে গুসকরার মধ্যে ছিল। এর পরেই পুলিশ বোলপুর থেকে প্রসেনজিতকে গ্রেফতার করে।

পুলিশের দাবি, প্রসেনজিৎ জেরায় তাদের জানিয়েছে, শাশুড়ি তাঁর সংসার ভাঙার চেষ্টা করছিলেন। সে দেখা করে মীমাংসা করতে চেয়েছিল। তার দাবি, কথা বলার সময়ে বচসা শুরু হয়। তখন শাশুড়ি তাকে বঁটি দিয়ে আঘাত করেন। এর পরেই রাগের মাথায় গলায় রুমাল পেঁচিয়ে সে লীলাদেবীকে খুন করেছে বলে ধৃত তাঁদের জানিয়েছে, দাবি তদন্তকারীদের।

মৃতার পরিজনদের দাবি, প্রীতির সঙ্গে প্রসেনজিতের বিয়ে নিয়ে পরিবারের মধ্যে ‘আপত্তি’ ওঠায় প্রসেনজিতের পাশে দাঁড়িয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন লীলাদেবী। এর পরেই তাঁকে বাড়ি ছাড়তে হয়। সেই শাশুড়িকে সন্দেহের বশে খুন করে প্রসেনজিৎ শ্বশুরবাড়িতেই ছিল,
এমন ঘটনা জানার পরে হতভম্ব পরিবার ও পড়শিরা। প্রীতি বলেন, ‘‘প্রসেনজিৎ এমন কাণ্ড করেছে, ভাবতেই পারছি না!’’

Murder arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy