দীর্ঘ টালবাহানার পরে বেনাচিতি বাজারকে যানজট মুক্ত করার ব্যাপারে উদ্যোগী হল প্রশাসন। সোমবার থেকে পুলিশ, পুরসভা, স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রাস্তায় জবরদখল করে থাকা দোকান ও স্টলগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে যদি চিহ্নিত দোকান সরিয়ে না ফেলা হয় তাহলে সেগুলি ভেঙে ফেলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “দিন চারেক আগে একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
এ দিন পুলিশ, পুরসভা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তাদের উপস্থিতিতে প্রান্তিকার দিক থেকে জবরদখল হয়ে থাকা দোকান ও স্টলগুলিকে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্সের পক্ষে রমাপ্রসাদ হালদার জানান, রাস্তার মাঝ থেকে দু’দিকে মোট ২৫ ফুট করে ফাঁকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছু স্টল এবং দোকানের বর্ধিত অংশ সরিয়ে নিতে হবে। তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, সব জায়গায় অবশ্য এতটা জায়গা ফাঁকা করা সম্ভব নয় রমাপ্রসাদবাবু বলেন, “রাস্তা যানজট মুক্ত হলে সবারই লাভ। সেটা বুঝতে হবে। আশা করি সবাই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।”
জাতীয় সড়কের ভিড়িঙ্গি মোড় থেকে বেরিয়ে যাওয়া নাচন রোডের দু’পাশে ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েক হাজার দোকান নিয়ে রয়েছে এই বড় বাজারটি। বেনাচিতি বাজার হল দুর্গাপুর শহরের অন্যতম প্রাচীন বাজার। প্রায় ছয় দশক আগে আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগেই এই বাজারটি গড়ে তুলেছিলেন। বর্তমানে এটিই শহরের প্রধান বাজার। স্বাধীনতার পরে দুর্গাপুরে বহু সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কারখানা গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বেনাচিতি বাজারে বিক্রি বাড়ে। বর্তমানে এর ভিতরে রয়েছে কয়েকটি পুরনো বাজার। কিন্তু এর সঙ্গেই বাইরের রাস্তা দখল করে রয়েছেন কয়েক হাজার হকার। অনেক স্থায়ী দোকানদারও সামনের রাস্তা দখল করে দোকান বাড়িয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের আক্ষেপ, বেনাচিতি বাজারের যানজট ও ভিড়ের জন্য ক্রেতাদের অনেকেই এই বাজার এড়িয়ে চলেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনাচিতি বাজারকে যানজট মুক্ত করার জন্য এর আগে অনেক বার বৈঠক করা হয়েছে। বিভিন্ন পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসু হয়নি। সম্প্রতি এই বাজারকে যানজট মুক্ত করার জন্য আরও একটি বৈঠক হয়। পুরসভা, পুলিশ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তারা সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যানজট ও ভিড় কমাতে রাস্তা এবং রাস্তার দু’পাশে আরও কিছুটা কাঁচা অংশ ফাঁকা করা হবে। এরপরে কাজ কতটা হয় সেটা অবশ্য সময় বলবে।