আড়াই দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আসানসোলের ডিপোপাড়ায় বালিকাকে খুনের চেষ্টায় জড়িতেরা ধরা পড়েনি। পুলিশের অবশ্য দাবি, এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যও হাতে এসেছে। একটু সুস্থ হওয়ার পরে মেয়েটির বয়ান নথিভুক্ত করেই অভিযুক্তদের পাকড়াও করা হবে বলে আশ্বাস পুলিশের।
শনিবার দুপুরে আসানসোল উত্তর থানার ডিপোপাড়ায় বছর দশেকের ওই মেয়েটির গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তাকে প্রথমে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান পরিবারের লোকজন। গত দু’দিন আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকলেও সোমবার তার অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল বলে হাসপাতালের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে মেয়েটির বয়ান লিপিবদ্ধ করা যাবে। কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিত্ ঘোষ জানান, ওই বালিকাই একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। তাই তার বয়ান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার সঙ্গে কথা বলার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
মেয়েটির বাবা টেলিফোন পরিষেবা সংস্থার কর্মী। আড়াই বছর আগে থেকে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ডিপোপাড়ায় ওই বাড়িতে ভাড়া রয়েছেন তিনি। ঘটনার পরে দু’দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত ধরা না পড়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার তাঁরা থানায় গিয়েও এ কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তা আচার্য বলেন, “ডিপোপাড়া এলাকায় এমন ঘটনা এই প্রথম। আমাদের বাড়িতেও ছোট মেয়ে আছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।” মেয়েটির বাড়িতে তালা ঝুলছে। জানা গেল, তার মা, বাবা-সহ বাড়ির সকলে হাসপাতালে গিয়েছেন। প্রতিবেশী শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় জানান, ঘটনার দিন মেয়েটি বাড়িতে একাই ছিল। বাইরে থেকে দরজায় শিকল তোলা ছিল। তিনি দাবি করেন, “এই ঘটনায় অপরিচিত কারও জড়িত থাকার সম্ভাবনা কম।” একই রকম বক্তব্য আর এক প্রতিবেশী চৈতালি মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “মেয়েটির মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আমরা ঘটনাটি জানতে পারি। বাইরের কেউ এসে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, ভাবতেই অবাক লাগছে।”
ভাড়াবাড়িটির মালিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় জানান, শনিবার দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ তাঁদের পরিচারিকা চিত্কার করে তাঁকে নীচে ডাকেন। তিনি বলেন, “আমি জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখি, আপাদমস্তক চাদরে ঢাকা মেয়েটি খাটে শুয়ে কাতরাচ্ছে। পুলিশ ডেকে দরজা খোলা হয়।” প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, মেয়েটি যে বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছিল, সেখানে প্রচুর রক্তমাখা তুলো রাখা ছিল। মাটিতেও রক্ত পড়েছিল। পুলিশ ওই তুলো ও কিছু নমুনা ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করেছে।
পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে। প্রতিবেশীরা ছাড়াও সম্ভাব্য সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কয়েক জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এলাকর এক রাজনৈতিক নেতাও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে পুলিশের অনুমান। অপ্রীতিকর কিছু দেখে ফেলা বা জেনে যাওয়ার জন্যই মেয়েটিকে আক্রান্ত হতে হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy