Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বেশি দাম চেয়ে ছানা দেওয়া বন্ধ, বিপাকে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা

দাম বাড়ানোর দাবিতে দুর্গাপুরের বিভিন্ন দোকানে ছানা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ছানা আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। তাতে সময় ও অর্থদুইয়েরই অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৩:২৩
Share: Save:

দাম বাড়ানোর দাবিতে দুর্গাপুরের বিভিন্ন দোকানে ছানা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ছানা আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। তাতে সময় ও অর্থদুইয়েরই অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের। যে পরিমাণ ছানা প্রয়োজন হয়, তার থেকে কম কিনে এনেই কাজ চালাতে হওয়ায় মিষ্টির চাহিদা মেটাতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। জেলা (শিল্পাঞ্চল) ছানা ব্যবসায়ী সমিতির অবশ্য পাল্টা দাবি, দাম বাড়াতে বলায় কিছু দোকানদারই ছানা কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্গাপুর সিটি সেন্টার, বেনাচিতি ও ইস্পাতনগরীর বেশ কিছু মিষ্টি দোকানে ছানা সরবরাহ বন্ধ করে দেন ছানা ব্যবসায়ীরা। ‘পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতি’র দুর্গাপুর শাখার তরফে অভিযোগ করা হয়, গত এক বছরে দু’দফায় ছানার দাম ১৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু ছানা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে আরও ৪০ টাকা টাকা দাম বাড়ানোর দাবি করা হয়। তা না মেটাতেই সরবরাব বন্ধ করেছেন ছানা ব্যবসায়ীরা। ওই সমিতির সভাপতি অরুণ নাগ জানান, তাঁদের সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৪০টি মিষ্টি দোকান আছে। সেগুলিতে গড়ে প্রতি দিন ২০ কুইন্ট্যাল ছানা প্রয়োজন হয়। অরুণবাবু আরও জানান, সরস্বতী পুজোর আগে ছানা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে তাঁদের সংগঠনকে ছানার দাম বাড়াতে বলা হয়। অরুণবাবু বলেন, “আমরা তখন জানাই, পরে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। এর পরেই আচমকা ছানা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দোকানে ছানা সরবরাহ পরিমাণ কম করে দেন। বিপাকে পড়েন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তা সত্ত্বেও কোনও রকমে কাজ চলছিল। কিন্তু হঠাত্‌ই ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ছানা সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।” তাঁর দাবি, এর ফলে, বিয়ের মরসুমে মিষ্টির জোগান ঠিক মতো রাখতে তাঁদের মেমারি থেকে ছানা আনতে হচ্ছে।

মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগ, এমনিতেই সিটি সেন্টার, বেনাচিতি ও ইস্পাতনগরীর বিভিন্ন দোকান থেকে ছানার দাম অন্য জায়গার তুলনায় বেশি নেওয়া হয়। সংগঠনের সম্পাদক দীপু সাহার দাবি, বর্ধমানে প্রতি কিলোগ্রাম ছানার দাম ১১৮ টাকা, বাঁকুড়ায় ১১০ টাকা। এমনকী, দুর্গাপুরের স্টেশনবাজার, মায়াবাজার এলাকাতেও ছানার দাম তুলনায় অনেকটা কম। একই শহরে দু’রকম দাম নেওয়ায় তাঁরাও অবাক। তিনি আরও জানান, হঠাত্‌ ছানা ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্তে তাঁদের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। তাঁর কথায়, “প্রতি দিন মেমারি থেকে ছানা এনে মিষ্টি তৈরি করা ব্যয়সাপেক্ষ। এ ছাড়া মেমারির বাজারে ছানার দাম ওঠানামা করে। এই বিয়ের মরসুমে ছানার দাম বেশ চড়া ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, সাধারণ মানুষ যেন মিষ্টি পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন।”

বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) ছানা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মিলন ঘোষের যদিও দাবি, “আমরা কোনও ধর্মঘট ডাকিনি। দাম বাড়াতে বলায় কিছু দোকানদারই ছানা নেওয়া বন্ধ করেছেন।” দুর্গাপুরের ওই সব এলাকায় ছানার দাম বেশি নেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ওখানে যে ছানা সরবরাহ করা হয়, তার গুণগত মান ভাল। অরুণবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “তিন দিন আগে ফোন করে জানিয়েই ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে সরবরাহ বন্ধ করেছে ঠানা ব্যবসায়ীরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur sweets price increase business-men
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE