Advertisement
E-Paper

বকেয়া চাইলে হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল, নালিশ

মিড-ডে মিলের বকেয়া টাকা কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না দিয়ে প্রধান শিক্ষক স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেন জনা তিরিশেক মহিলা। আউশগ্রাম থানায় বিল্বগ্রাম অঞ্চল কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ৯ জন তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২২

মিড-ডে মিলের বকেয়া টাকা কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না দিয়ে প্রধান শিক্ষক স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেন জনা তিরিশেক মহিলা। আউশগ্রাম থানায় বিল্বগ্রাম অঞ্চল কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ৯ জন তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ওই মহিলাদের আরও দাবি, পাওনা টাকা চাইতে গেলে ওই তৃণমূলের নেতারা ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন।

তবে অভিযোগ একেবারেই স্বীকার করেননি বিল্বগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্রকান্ত পাল এবং তৃণমূলের নেতারা। আউশগ্রামের বিডিও অরুণ পাল অবশ্য বলেন, “আমি এই অভিযোগের কথা জানি। পুরো বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেব।” অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনার তদন্ত নেমেছে আউশগ্রাম থানাও।

অভিযোগপত্র
সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

দুলি হেমব্রম, আরতি ঘোষ, মিঠু বন্দ্যোপাধ্যায়েরা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, ২০১১ সাল থেকে বিল্বগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিলের রান্নার কাজ করতেন তাঁরা ৩০ জন। প্রথম দিকে প্রতি মাসে নগদ টাকাও পেলেও পরে টাকা বন্ধ করে দেন প্রধান শিক্ষক। দুলিদেবীর অভিযোগ, “২০১২ সালের অগস্ট থেকে আমাদের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন প্রধান শিক্ষক। এরপরে বারবার টাকা চাইতে গেলে ‘দেওয়া হবে, দেওয়া হবে’ বলে জানান। বছর দু’য়েক আগে আমাদের বলা হয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করলে তবেই বকেয়া টাকা মিলবে। সেই মতো দেড় বছর আগে স্থানীয় বনপাশে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। কিন্ত ওই অ্যাকাউন্টে এখনও পর্যন্ত এক টাকাও দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।” ওই মহিলাদের অভিযোগ, বকেয়া টাকা না দিয়েই বিনা কারণে স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নার কাজ থেকে তাঁদের সরিয়ে দিয়ে অক্টোবর মাস থেকে নতুন মহিলাদের রান্নার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, মিড-ডে মিলের কাজ বাবদ তাঁরা স্কুল থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পান।

লিখিত অভিযোগে ওই মহিলারা আরও জানিয়েছেন, পাওনা টাকা চাইতে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁদের জানান যে তাঁদের নাম করে উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সজল বন্দ্যোপাধ্যায়, দলিল মেটে-সহ ৯ জন ওই টাকা তুলে নিয়ে গিয়েছেন। ওই মহিলারা টাকা কেন পাননি, তা নাকি প্রধান শিক্ষকও বুঝতে পারছেন না। ওই মহিলাদের অভিযোগ, “এরপর আমরা তৃণমূলের ওই নেতাদের কাছ থেকে আমাদের পাওনা টাকা দাবি করতে যাই। কিন্তু বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এমনকী জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকিও দেন ওই তৃণমূলের নেতারা।”

যদিও অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতারা এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর প্রধান শিক্ষক চন্দ্রকান্ত পাল মিড-ডে মিলের রাঁধুনিরা কেন পাওনা টাকা পাচ্ছেন না এ প্রশ্নের জবাব দেননি। তিনি শুধু বলেন, “প্রধান শিক্ষক তৃণমূলের নেতাদের হাতে টাকা তুলে দেবে এটা কী বিশ্বাসযোগ্য? তা ছাড়া আমি কোনও উল্টোপাল্টা প্রশ্নের জবাব দেব না।”

প্রধান শিক্ষক জবাব এড়িয়ে গেলেও তৃণমূলের নেতারা জানিয়েছেন, নতুন নিযুক্ত মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৫২ হাজার টাকা ভুলবশত ঢুকে গিয়েছে। সেই টাকা তাঁরা প্রধান শিক্ষকের হাতে তুলে দিয়েছেন। বিল্বগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই গোষ্ঠী স্কুলে বেআইনি ভাবে কাজ করত। আমরা আইন মোতাবেক নতুন মহিলা গোষ্ঠীদের মিড-ডে মিলের কাজে লাগিয়েছি। নতুন গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছিল। সেই টাকা অতিকষ্টে জোগাড় করে প্রধান শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে। এখন অভিযোগকারীরা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নিতে যাচ্ছেন না। আর কিছুদিন দেখার পর প্রধান শিক্ষককে বলব, টাকা সরকারের ঘরে ফেরত দেওয়ার জন্য।” ওই মহিলারা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়ে দিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য রুবী ধীবর। তিনি বলেন, “ওই মহিলারা আমাদের কাছে এসেছিলেন। তাঁদের প্রতি যাতে অবিচার না হয়, তার জন্য দল ও প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি।”

—নিজস্ব চিত্র।

soumen dutta ayushgram outstanding wages midday meal tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy